দুদকের ২৫ সুপারিশ: স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ১১ উৎস

dudok-logo

সারাদেশে স্বাস্থ্য খাতে অনুসন্ধান চালিয়ে ১১টি দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করেছে দুদক। আর এ খাত থেকে দুর্নীতি নির্মূলে ২৫ দফা সুপারিশ প্রণয়ন করেছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন দুদকের পরিচালক মোজাম্মেল হক খান। পরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরেন।

দুদকের এই পরিচালক বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব খাতে দুর্নীতির সুযোগ রয়েছে এমন ১১টি খাত আমরা ধরতে পেরেছি। আর এসব জায়গা থেকে কীভাবে দুর্নীতি নির্মূল হবে তার জন্য ২৫টি সুপারিশ মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি। আমরা মনে করি তারা এ বিষয়ে আরও যতœবান হলে স্বাস্থ্যখাত থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।’

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা জানি প্রতিরোধ করলে প্রতিবাদের দরকার হয় না। ফলে আমাদের সরকার যেহেতু জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে ফলে আমরা দুর্নীতির বিষয়ে আরও কঠোর হবো। আর দুর্নীতি ঠেকাতে না পারলে উন্নত দেশ গড়ার কাজ বাধাগ্রস্ত হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার এখন ‘দুর্নীতিকে না বলুন’ নীতিতে চলছে। আর দুদকও সেই একই নীতির সঙ্গে কাজ করছে। আমরা আশা করি এসব তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখবে।’

স্বাস্থ্যে দুর্নীতির খাতগুলোর মধ্যে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রয়, সেবা, নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, ইক্ইুপমেন্ট ব্যবহার, ঔষধ সরবরাহ অন্যতম।

২৫ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, তথ্যবহুল সিটিজেন চার্টার, মালামাল রিসিভ কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সংস্থার সদস্যদের অন্তর্ভুক্তিকরণ, ঔষধ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ইজিপিতে টেন্ডার অনুসরণ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপন ও অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্থায়ী চিকিৎসক/ কর্মচারী ও কার্যনির্বাহী কমিটি ইত্যাদি রয়েছে কি না এসব বিষয় নিশ্চিত হতে হবে।

এছাড়া বদলির নীতিমালা প্রণয়ন, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম না লিখে জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা, ইন্টার্নশিপ এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করা এবং বর্ধিত এক বছর উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে পিএসসি এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক (স্থাস্থ্য) এবং পিএসসির প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ প্রদান করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করা হয় দুদকের ওই প্রতিবেদনে।

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুদকের দেওয়া প্রতিবেদন আমরা স্টাডি করবো। আমরা ইতিমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। তারা যেসব সুপারিশ করেছে তাও আমরা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যেহেতু দুর্নীতি থাকলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয় না। স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির কোনো আছড় যাতে না থাকে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো। কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিতে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে প্রয়োজন ছাড়া কোনো বদলি হবে না। যারা যেখানে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে দরকার হবে তারা সেখানে বদলি হবে। তাছাড়া কোন বদলি নয়। কোনো তদবিরে বদলি হবে না। আমরা হাসপাতালগুলোর সেবা বিষয়ে একটি মনিটরিং সেল করেছি। তারা সেবা বিষয়ে কাজ করছে। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যে আরও উন্নতি হবে।’

এ সময় মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।