যশোর গণপূর্ত অধিদপ্তরের অফিস সহকারী পরিতোষ কুমার রায়ের মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চালাচ্ছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আশিষ ডি কস্তা। মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হবার পর দৌড়ঝাপ শুরু করেন ওই প্রকৌশলী। তার অপকর্মের সহযোগী কতিপয় কর্মচারীদেরকে গণমাধ্যমে অফিসে পাঠান যাতে আর কোন খবর প্রকাশ না হয়।
এদিকে, গতকাল নির্বাহী প্রকৌশলী আশিষ ডি কস্তা মৃত. পরিতোষ কুমার রায়ের দুই ছেলেকে নিয়ে তার অফিসে রুদ্ধতার বৈঠক করেন সংবাদ মাধ্যমে কোন কথা না বলার জন্য। এছাড়া অফিসের তার অনুগত কতিপয় কর্মচারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন কে সাংবাদিকদেরকে পরিতোষ কুমার রায়ের মৃত্যুর খবর দিয়েছে তা বের করার জন্য। শুধু তাই নয়, কে সাংবাদিকদের এ খবর দিয়েছে তাও বের করার জন্য।
এদিকে, অফিস সহকারী পরিতোষ কুমার রায়ের স্ত্রী ভারতী রাণী রায় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, তার স্বামী (পরিতোষ কুমার রায়কে) অত্যাচার ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আশিষ ডি কস্তা তাকে অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে।
ভারতী রাণী রায় বলেন, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে যশোর গণপূত অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার আর এক বছর চাকরি ছিল। গত তিন মাস ধরে তার ওপর (পরিতোষ কুমার রায়) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল নির্বাহী প্রকৌশলী আশিষ ডি কস্তা। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে বদলি করা হচ্ছিল। এছাড়া তাকে ডিভিশনের বাইরে পাঠানোর হুমকি দিয়ে আসছিল আশিষ ডি কস্তা। এতে করে মানষিকভাবে হয়রাণির শিকার হচ্ছিল পরিতোষ কুমার রায়। আর এ কারণে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন পরিতোষ কুমার রায়ে। শুক্রবার রাতে তাকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় যশোর কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিসাধীন অবস্থায় শনিবার মারা যান পরিতোষ কুমার রায়।
পরিতোষ কুমার রায়ের বড় ছেলে প্রদীপ কুমার রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। কিছু অভ্যান্তরীণ বিষয় আছে, যা এই মুহুতে বলা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘সময় সুযোগ মত বুঝে আমারা মিডিয়ার সামনে হাজির হবো। আমার বাবার হত্যার বিচার আমরা চাইবো।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহুর্তে আমরা যদি কিছু বলতে চায়, তাহরে পেনশনের ক্ষতি হতে পারে। এ কারণে আমরা কিছু বরতে চায় না। তবে তিনি তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
যশোর গণপূত অফিসের অফিস সহকারী পরিতোষ কুমার রায় সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।
এদিকে, পরিতোষ কুমার রায়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যশোর গণপূর্ত অফিসের দুর্নীতিবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী আশিষ ডি কস্তা নানা রকম অনিয়ম দুর্নীতি বের হতে শুরু করেছে। তার অনিয়ম-দুর্নীতি খবর সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশও হতে শুরু করেছে। তিনি গণমাধ্যমের সাথে অফিসের কাউকে কিছু না বলার জন্য নির্দেশ জারি করেছেন। এছাড়া অফিসের যারা তার অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করে তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আশিষ ডি কস্তা বলেছেন, পরিতোষের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থবাদী মহল গুজব রটাচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে অফিসিয়ালিভাবে জানাবেন।