ব্রেক্সিটের জন্য তিন মাস সময় চেয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

পার্লামেন্ট সদস্যদের কাছে কোনো গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব আনতে না পেরে শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে ব্রেক্সিট কার্যকরের জন্য তিন মাস সময় চেয়েছেন ব্রিটিনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের সভাপতি ডোনাল্ড ট্রাক্সকে লেখা এক চিঠিতে থেরেসা মে বলেছেন, ব্রিটেন ব্রেক্সিট কার্যকরের জন্য ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চায়। তবে ইইউ জানিয়েছে, সময় বাড়ানোর ব্যাপারে ইইউর ২৭টি দেশ সম্মত হতে হবে।

পরে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে থেরেসা মে বলেন, তিনি ‘জনগণের পাশেই’ রয়েছেন। রাজনীতিবিদদের ‘প্রবল বিরোধিতা আর রাজনৈতিক গেমে জনগণ ক্লান্ত’। ব্রেক্সিট প্রশ্নে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এখনই ‘সর্বোচ্চ সময়’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে দুবার ব্রেক্সিটের খসড়া সংসদে উপস্থাপন করে বিপুল ভোটে পরাজিত হন থেরেসা মে। পরে তৃতীয়বার আবার ভোট করার পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়। এরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চিঠি লেখেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।

তবে যদি ইইউ সময় বাড়াতে রাজি না হয়, তবে আগামী ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকরের সময় নির্ধারিত রয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া, অর্থাৎ ‘ব্রিটিশ এক্সিট’ নামটিকেই সংক্ষেপে ‘ব্রেক্সিট’ নামে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ব্রিটেন ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ছিল। এর মাধ্যমে ব্রিটেনে বসবাসরত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৮টি দেশের বাসিন্দারা বিশেষ সুবিধা ভোগ করতেন। কিছু ব্রিটিশ রাজনৈতিক দল ও তাদের সমর্থকরা মনে করেন, এটা তাদের অর্থনীতির ওপর অযথা চাপ তৈরি করছে।

এই ইস্যু সামনে রেখেই ২০১৬ সালের ২৩ জুন একটি গণভোট নিয়েছিল যুক্তরাজ্য। সেই ভোটে ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকা উচিত কি না?

সেই গণভোটে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে। আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। এর পর থেকেই এই ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হয় ব্রিটেনের রাজনৈতিক শোরগোল।

একজন প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যান, থেরেসা মের নেতৃত্বে আগাম ভোট হয়, কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। আগামী ২৯ মার্চ ব্রেক্সিটের সময়সীমা নির্ধারিত থাকলেও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যরা এখনো এ ব্যাপারে একমত হতে পারছেন না।