এমপিওভুক্ত হবে স্বয়ংক্রিয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় নয় : শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে এমপিও দেয়া হয় নাই। এবার এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেয়েছি। আগামী বাজেটে অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে এমপিও দেওয়া হবে। শনিবার বিকেলে যশোরের চৌগাছা উপজেলার ডিভাইন সেন্টারে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে অনলাইনের মাধ্যমে এমপিও আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। সেই আবেদন বিভিন্ন ক্রাইটোরিয়া দেওয়া হয়েছিল। সেখানে পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। পয়েন্টের ভিত্তিতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। এতে যদি কেউ ন্যায্যতা বঞ্চিত হয়,তাহলে বিষয়টি দেখা হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় কোন প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে না। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের আলোচনা চলছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও বিষয়ে আমাদের আপাতত কোন পরিকল্পনা নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান সমাপ্ত করেই উচ্চ শিক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির কারনে গ্রাম ও শহরের ফলাফলের পার্থক্য কমে এসেছে। দক্ষ জনসম্পদ তৈরী না করতে পারলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না। সে বিষয় সামনে রেখে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। বৃত্তিমূলক ট্রেনিং দেয়া হবে।

উপমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত হচ্ছে গ্রামে বসেও জনগন যেন শহরের সকল সুবিধা পায়। সে কারনে সকল কার্যক্রমে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সম্পৃক্ত করতে হবে। গণমাধ্যম, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সমন্বয়ের মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

মতবিনিময় সভায় যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব) অধ্যাপক ডাক্তার নাসির উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল আলীম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র, চৌগাছা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান, নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান লাড্ডু, চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফুল আলম, যশোর সদর উপজেলার নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল, চৌগাছা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহব্বায়ক দেবাশীষ মিশ্র জয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এসএম সাইফুর রহমান বাবুল প্রমুখ।

এর আগে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ ও সদ্যজাতীয় করণকৃত চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।

এদিকে, সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টের (বিএসএম) ৩২তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বমহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

তিনি বলেন, উচ্চতর জ্ঞান বিজ্ঞানের শাখার গবেষণার বই-পুস্তকসমূহ ইংরেজি ভাষায়। ভাষার এ প্রতিবন্ধকতার জন্য আমরা সম্পূর্ণভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপকারিতা আত্মস্থ করতে পারছি না। আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বই এবং জার্নালগুলো যদি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়, তাহলে বিজ্ঞানের ধারণাগুলো সকলে সহজে বুঝতে পারবে। আমাদের গবেষকদের সংখ্যাও বাড়বে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ কাজী নাবিল আহমেদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো: ইকবাল কবীর জাহিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের ফেলো মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. এ এস এম মতিউর রহমান ও ‘শান্তিস্বরূপ ভাতনগর’ পুরস্কারপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতের হায়দারাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ।

অনুষ্ঠানে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান, যশোরের বিশিষ্টজনেরাসহ উপস্থিত ছিলেন এবং দেশি-বিদেশি প্রায় আড়াই শতাধিক আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী এবং পিএইচডি-এমফিল ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সম্মেলনে অণুজীব বিজ্ঞানের গবেষণা ছাড়াও সরকাররে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, জলবায়ু পরিবর্তন, জৈব তথ্য-প্রযুক্তির উপর গবেষণার বিষয়ে ১৬১টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।