শেরপুরে ধর্ষণ মামলার আসামীর ফাঁসি

শেরপুরে আদিবাসী এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় কান্তি মারাক (৪১) নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান একমাত্র আসামীর উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ভিকটিম-ডিসিস্টের পরিবারকে আরও ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতেও আদেশ দেয়া হয়। দণ্ডিত কান্তি মারাক নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পানিহাতা ফেকামারী এলাকার নীতিশ মান্দার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত কান্তি মারাক একেবারেই ভাবলেশহীন ছিল।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ২০১৩ সালের ৩০শে মার্চ সন্ধ্যায় নালিতাবাড়ী উপজেলায় সীমান্তবর্তী পানিহাতা ফেকামারী এলাকায় প্রজিন্দ্র মারাক ও তার স্ত্রী বসতবাড়িতে না থাকার সুযোগে শিশু নাতি বিথি দিওয়াকে (৮) ফুসলিয়ে ডেকে নিজে দু’চালা হাফ বিল্ডিং বসতঘরে নিয়ে ধর্ষণ শেষে গলা টিপে হত্যা করে একই এলাকায় বসবাসকারী তাদের আত্মীয় কান্তি মারাক। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে বসতবাড়ির পাশের পানি সেচের ড্রেনে বিথি দিওয়ার লাশ ফেলে রাখে।

পরে নানা প্রজিন্দ্র মারাকসহ পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কান্তি মারাকের বসতঘরে বিথি দিওয়ার পরিহিত রক্তাক্ত হাফ প্যান্টসহ পাশের সেচের ড্রেনে তার লাশের হদিস পায়। ওই ঘটনায় পরদিন প্রজিন্দ্র মারাক বাদী হয়ে কান্তি মারাককে আসামী করে নালিতাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার একদিন পরই কান্তি মারাককে পার্শ্ববর্তী ফুলপুর উপজেলার এক আত্মীয় বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সে আদালতে ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তদন্ত শেষে একই বছরের ৪ জুন কান্তি মারাকের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (২) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাফিজ আল আসাদ।

বিচারিক পর্যায়ে সংবাদদাতা বাদী, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট, ধর্ষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনাল একমাত্র আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়।

ওই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু। অন্যদিকে আসামী পক্ষে ‘স্টেট ডিফেন্স’ (সরকারি খরচে নিযুক্ত আইনজীবী) হিসেবে মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট আবু জার গাফফারি অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, আসামী হতদরিদ্র হওয়ায় তাকে উচ্চ আদালতে জেল আপিলের পরামর্শ দেয়া হবে।