বগুড়ায় ২২ ঘণ্টা পর বিএনপি কার্যালয়ের তালা খুলল

বগুড়ায় প্রায় ২২ ঘণ্টা পর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের তালা খুলে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন তালা খুলে দিলে নেতাকর্মীদের মাঝে স্বস্তি দেখা দেয়।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপি কার্যালয়ে জরুরি সভা চলছিল।

সেখানে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামকে বাদ দিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখন সাইফুল ইসলামের সমর্থক হিমু ও পরিমল বিশঙ্খলা সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে হাতাহাতি ও বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তাদের দু’জনকে দলীয় পদ থকে অব্যাহতি ও সাইফুল ইসলামকে শোকজ করেন।

ঘটনাটি জানাজানি হলে সাইফুল, হিমু ও পরিমলের সমর্থকরা বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শহরে নবাববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। সেখানে বিভিন্ন লেখাসংবলিত পোস্টার লাগিয়ে নেতাকর্মীরা গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন।

দুই নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে শুক্রবার বিকালেও দলীয় কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

এ ঘটনার জন্য বগুড়া-৫ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সংস্কারপন্থী খ্যাত গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে দায়ী করে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে তালা খুলে দেন। এ সময় জানানো হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্র হিমু ও পরিমলের বিরুদ্ধে নেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, এ ব্যাপারে তারেক রহমান কোনো নির্দেশ দেননি। কেন্দ্রীয় বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা অবিলম্বে অফিসের তালা খুলে দিতে ও প্রতিবাদ সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ দেন। অন্যথায় এসবের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সবাইকে বুঝিয়ে তারা খুলে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন বলেন, তারেক রহমান কোনো নির্দেশ বা আশ্বাস দিয়েছেন কিনা সে ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। কেন্দ্রীয় বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বিবেচনার আশ্বাস ও তালা খুলে দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে বলেন। তাই পরিমল, হিমু ও আন্দোলনকারীদের ডেকে এনে আলোচনার পর তাদের মাধ্যমে অফিসের তালা খুলে দেয়া হয়েছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশেই দলীয় অফিসের তালা খুলে দেয়া হয়েছে।