ফখরুলের পাশে নেই সিনিয়র নেতারা!

mirza fokrul islam
ফাইল ছবি

অনেক গুঞ্জন আর জল্পনা-কল্পনা শেষে একাদশ জাতীয় সংসদে যোগ দিয়েছেন বিএনপির ৫ নির্বাচিত এমপি। তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো শপথ নেননি।

সোমবার ছিল একাদশ সংসদের শপথগ্রহণের শেষ দিন। এই শেষ দিনে ফখরুল ছাড়া বিএনপির সব এমপিরাই অবশেষে শপথ নিলেন।

যদিও নির্বাচনের পরই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সংসদে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু অবশেষে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল তারা।

শপথগ্রহণের শেষদিনে দলের আরও চারজন এমপি শপথ নেয়ায় রাজনীতির মাঠে শুরু হলো নতুন উত্তাপ, আলোচনা-সমালোচনা।

যদিও দলের এমপিদের শপথের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশেই সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু এ সময় ফখরুলের পাশে দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে কোনো পর্যায়েরই নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি। মহাসচিব একাই সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা দলের সবার সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নেতাকর্মীরা এতে সমর্থন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলন যুগপৎভাবে চালিয়ে যাওয়াকে যুক্তিযুক্ত মনে করছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতি এ সংকটময় সময়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, তার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামের অংশ হিসেবে আমরা সংসদে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ফখরুল বলেন, আশা করি দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় অবিলম্বে একটি অবাধ জাতীয় সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রীসহ সব রাজবন্দিকে মুক্ত করতে পারব।

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পলিটিক্সের কারণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতেই পারে। এটাই পলিটিক্স।

এর আগে বিকালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত চার সংসদ সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

শপথ নেয়া চারজন হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিয়েছিলেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ। এর জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ফলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বিএনপির সব সংসদ সদস্যই শপথ নিলেন।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আটটি আসনে জয়লাভ করে। এর মধ্যে ছয়জন বিএনপির, বাকি দুজন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের। নির্বাচনের পরপরই ভোটে ব্যাপক অনিয়ম এবং কারচুপির অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানানোর পাশাপাশি তারা শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গণফোরামের দুই সংসদ সদস্যের মধ্যে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেন। তাকে অনুসরণ করে গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত দলটির আরেক নেতা মোকাব্বির খান গত ২ এপ্রিল শপথ নেন।