ফোনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে কথা হলো ওবায়দুল কাদেরের

হার্টে গুরুতর অসুখ নিয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কথা বলেছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৩ মার্চ হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর এটিই সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম কথোপকথন। বুধবার দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়।

বুধবার বিকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা শেখ ওয়ালিদ ফয়েজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় ওবায়দুল কাদের নিজের বর্তমান শারীরিক অবস্থার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। জানান, তিনি অনেকটাই সুস্থবোধ করছেন।

শেখ ওয়ালিদ জানান, বুধবার সকাল ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে ঠিকমতো চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরার কথা বলেন।

তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করায় এবং সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখায় ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান। শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদেরের পরিপূর্ণ চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত আরোগ্য হয়ে ওঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী আরও দুই সপ্তাহ সিঙ্গাপুরে অবস্থান করে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে তারপর দেশে ফিরতে বলেছেন ওবায়দুল কাদেরকে। ওবায়দুল কাদেরও দুই সপ্তাহ পর দেশে ফেরার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন। এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর শেষ দেখা হয় ৩ মার্চ। ওবায়দুল কাদের তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) অচেতন অবস্থায় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সিসিইউতে গিয়ে লাইফসাপোর্টে থাকা ওবায়দুল কাদেরকে নাম ধরে ডাক দেন। এ সময় ওবায়দুল কাদেরের চোখের পাতা নড়ে ওঠে। এর পর থেকে এ দুই নেতার মধ্যে কোনো কথা হয়নি।

চার দিন আগে ওবায়দুল কাদের সিঙ্গাপুরে তার অ্যাপার্টমেন্টের নিচে মর্নিং ওয়ার্ক করছেন— এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, নিজে নিজেই তিনি স্বাভাবিক গতিতে হাঁটছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।

বাইপাস সার্জারির পর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে ওবায়দুল কাদের গত ৫ এপ্রিল ছাড়পত্র পান। তিনি হাসপাতালের কাছেই একটি ভাড়া বাসায় থাকছেন।

২০ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়।

প্রসঙ্গত গত ৩ মার্চ সকালে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের।

সেখানে এনজিওগ্রাম করার পর তার করোনারি ধমনিতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। সেদিন তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে উপমহাদেশের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠির পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ মার্চ তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়।

ওই রাতেই মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ডা. ফিলিপ কোহ’র নেতৃত্বে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। পরে গত ২০ মার্চ ওই হাসপাতালে তার বাইপাস সার্জারি করেন মেডিকেল বোর্ডের সিনিয়র সদস্য কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. সিবাস্টিন কুমার সামি। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গত ২৬ মার্চ ওবায়দুল কাদেরকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে কেবিনে নেয়া হয়।