যশোরের রুদ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

jessore map

যশোর সদরের একটি বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে ওই সভাপতির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদরের রুদ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নিন্মমানের বই চালিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন একটি পুস্তক কোম্পানির কাছ থেকে। এছাড়া স্থানীয় চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজের কাছ থেকে অনুদানের ৪০ হাজার টাকাও হাপিস করে দিয়েছেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার পর থেকে একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। যশোরের শীর্ষ এক জনপ্রতিনিধির আস্থাভাজন হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।

সূত্র জানায়, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। কোন কিছু করতে হলে সব সদস্য ঐক্যমতে মিলে করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সভাপতি কোন নিয়ম না মেনে নিজের ক্ষমতা বলে একের পর এক অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের পুরাতন বিল্ডিং নিজের ক্ষমতা বলে ভেঙ্গে বিক্রি করে দিয়েছেন। অথচ নিয়ম রয়েছে, কোন বিল্ডিং ভাঙতে হলে পরিচালনা কমিটির মতমত নিয়ে ভাংতে হবে। কিন্তু সভাপতি কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজের মত সব কিছু করেছেন। তিনি জোর পূর্বক প্রধান শিক্ষককে ভয় দেখিয়ে এসব অনিয়ন-দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।

তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি সরকারকে বেশ কয়েক বার লাঞ্ছিতও করা হয়েছে।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি সরকার বলেন, সভাপতি সব কিছু করেন। তার সাথে কিছু লোক আছে যারা তার এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কাজে সহযোগিতা করে। আমি তার সম্পর্কে কিছু বলতে চায় না। আপনারা খোঁজ নেন। সব কিছু জানতে পারবেন।

সভাপতি আব্দুর রহমানের অনিয়ম সম্পর্কে খোঁজ নিতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা বজলুর রহমান বলেন, সভাপতি একজন অশিক্ষিত লোক। তার সন্ত্রাসী ও গোন্ডা বাহিনীর কারণে বিদ্যালয়টি ধ্বংস হতে চলেছে।

বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও দাতা সদস্য মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আমি বিদ্যালয়ের দুই বার সভাপতি ছিলাম। বর্তমান সভাপতি আব্দুর রহমান বিদ্যালয়টিকে নিজের বাপ-দাদার সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি কোন নিয়ম মানেন না। আমি দাতা সদস্য আমাকে কোন কিছু না জানিয়ে নিজের মত সব কিছু করেন। বিদ্যালয়ের বিল্ডিং বেচে খাওয়া থেকে শুরু করে শিক্ষকদের মারপিট ও লাঞ্ছিত করা সব কিছু তিনি করেন।

জানতে চাইলে সভাপতি আব্দুর রহমান বিদ্যালয়ের বিল্ডিং বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে নতুন বিল্ডিং হবে। আমরা যখন পড়াশুনো করেছি তখনকার বিল্ডিং। তাই বিক্রি করে দিয়েছি। যারা এসব অপপ্রচার করছে, তারা আমার সাথে ভোট করে হেরে গিয়েছে। এখন তারা নানা রকম ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।