রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় জাতিসংঘ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বলেছেন, ‘জাতিসংঘ সবকিছু জানার পরও তারা অনেক কিছু গোপন রেখেছে, নিশ্চয়ই তারা এর জন্য দায়ী।’
বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সেমিনারে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) এ জেনেভা কনভেনশনের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘বহু বছর ধরে মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসা, বিদ্বেষ এবং বর্বর আক্রমণ চলছে। কিন্তু জাতিসংঘ এ বিষয়ে কখনোই সজাগ হয়নি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ অনেক কিছুই গোপন করেছে। এজন্য তারা নিশ্চয়ই দায়ী।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের পদ্ধতিগত ভুল ছিল উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘এই দুর্ঘটনা একদিনে হয়নি। অনেকদিন ধরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। জাতিসংঘ সেই বিষয়ে সজাগ হয়নি। ঘটনা ঘটার পর জাতিসংঘ কিছু বক্তব্য দিয়েছে, কিন্তু এর বেশিরভাগ বাংলাদেশের জন্য। যেখানে কাজটা করা দরকার সেই রাখাইন প্রদেশে, সেখানে জাতিসংঘের অবস্থান খুবই দুর্বল।’
জাতিসংঘের সমালোচনায় মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বলে থাকি, দুনিয়া থেকে সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। কিন্তু জাতিসংঘ এই নীতিতে বিশ্বাসী হলেও কাজ করে না।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জেনেভা কনভেনশন আইন লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে জেনেভা কনভেনশন আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে যারাই আইন তৈরি করেছে, তাদের অনেকে যখন মানবতা লঙ্ঘিত হয়, তখন মুখ ফিরিয়ে নেয়। এর ফলে আইনগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।’
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর রেড ক্রস এবং ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ডিকাব) এই সেমিনারের আয়োজন করে।