রাবি’র সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরো এক ছাত্রীর অভিযোগ

ru logo

রাবি প্রতিনিধি: ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফের আরো এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী এই অভিযোগ করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাক যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইইআর পরিচালক বরাবর এই অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। তবে লিখিত কোন অভিযোগ এখননো আমার হাতে আসেনি।

আইইআর সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৪র্থ বর্ষের এক ছাত্রী যৌন হয়রানী ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত শিক্ষক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মধ্য রাতে ফোন দিতেন, মেয়েদের শরীর নিয়ে অশালীন ও আপত্তিকর কথা বলতেন, কারণে-অকারণে চেম্বারে ডেকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখতেন।

পরে মঙ্গলবার বিকেলে পরিচালকের সামনে ২য় বর্ষের এই ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ওই দিন এক জরুরী সভা ডেকে ওই শিক্ষককে ২য় ও ৪র্থ বর্ষের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এবং আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরিকে প্রধান করে তিন সদস্যোর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জানতে চাইলে দ্বিতীয় বর্ষের ভুক্তভোগী এই ছাত্রী বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ওই শিক্ষক আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। আমি ভয়ে কাউকে বলতে পারছিলাম না। আমার এক বড় আপু মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ দিলে সেদিন গিয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছি, আজ লিখিত দিলাম।

দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রী তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘আমিও অনেক ভাবে বিষ্ণুকুমার অধিকারীর দ্বারা মানসিক হেনস্থা ও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছি। মেয়েদের শরীর সম্পর্কে আপত্তিজনক কথা, তার চেম্বারে নিয়ে দীর্ঘক্ষন বসিয়ে রাখা এগুলা সে করেছে। আমি নিষেধ করা সত্যেও তিনি আমাকে উত্ত্যক্ত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমি মানসিক ভাবে খারাপ অবস্থায় ছিলাম। কাউকে ভয়ে বলতে পারসিলাম না।’

অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ওই শিক্ষক তাকে চেম্বারে ডেকে নিয়ে তার শরীর নিয়ে নানা অশালীন কথাবার্তা ও বাজে ইঙ্গিত করতেন, মধ্য রাতে ফোন দিতেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাকে উত্ত্যক্ত করারও প্রতিবাদ করেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাস ও সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইইআরের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসছেই। উনার যে স্বভাব, হয়ত এখনো অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না। অভয় পেলে হয়ত ক্যাম্পাসের অন্য অনেক বিভাগ থেকে এমন আরো অনেক অভিযোগ আসতে পারে।

তবে শুরু থেকে বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী। এবং ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বাদি করেন তিনি।