শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের বিতর্কিত ধারা বাতিলের দাবিতে জাবি প্রেসক্লাবের স্মারকলিপি প্রদান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের বিতর্কিত দুটি ধারা বাতিলের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব এর সদস্যরা।
বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আবু সায়েম ও যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রায়হান চৌধুরীর নেতৃত্বে উপাচার্যের একান্ত সচিবের কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এ প্রসঙ্গে জাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো: মুসা বলেন, ‘ধারা দুটি মুক্তচিন্তা ও স্বাধীন গনমাধ্যমের পথে বাঁধা সৃষ্টি করবে। বাঁধাগ্রস্ত হবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। অন্যদিকে দুর্নীতি ও অনৈতিকতা বেড়ে যাবে। আমরা মনে করি ধারা দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কাজের স্বচ্ছতার জন্যেই অতি দ্রুত বাতিল করা উচিৎ।’

সংগঠনের সহ-সভাপতি আবু সায়েম ধারা দুটি বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন সাংবাধিকতার প্রতি নগ্ন হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বাধীন চিন্তার পথে বাঁধা সৃষ্টিকারী বিতর্কিত দুটি ধারা অভিলম্বে বাতিল করতে হবে। প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা খুবই জরুরী। কিন্তু এ দুটি ধারা অনুসন্ধানী ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রোধ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ধারা দুটি বাতিল করে ছাত্রবান্ধব ও যুগোপযোগী ধারা প্রনয়ন করার দাবি জানাচ্ছি।’

উপাচার্য তার কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় তার একান্ত সচিবের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের সময় কার্যকরী সদস্য মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, ইমন মাহমুদ ও সদস্য আসিফ আহমেদ, আরিফুল ইসলাম শাকিল, শরিফুল ইসলাম রোমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ-২০১৮ বিতর্কিত ধারা দুটি হলো- ৫ (ঞ)- ‘কোনো ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/জাতীয়/আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না’।

এবং ৫ (থ)- কোনো ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্যক্ত করবে না।

একই সাথে অধ্যাদেশ মতে, ধারা দুটির ব্যত্যয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ‘অসদাচরণ’ বলে গণ্য হবে এবং এজন্য লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যেকোনও পরিমাণ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।