রিফাত হত্যাকাণ্ড ব্যক্তিগত জেরের কারণে : পুলিশ

বরগুনায় স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পেছনে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব কাজ করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন। এ সময় তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় দুজন আসামি এবং একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, পুলিশের বরিশাল বিভাগের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশ যেকোনো মূল্যে হত্যাকারীদের ধরবে। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে কারো এ ব্যাপারে কোনো গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ একদল যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরিফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। রিফাতের স্ত্রী আয়েশা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন; কিন্তু তাদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরিফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরিফ বৃহস্পতিবার সকালে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেছেন। তাঁরা হলেন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হাসান, চন্দন এবং সন্দেহভাজন নাজমুল হাসান। হাসান মামলার ৯ নম্বর আসামি, চন্দন ৪ নম্বর আসামি। এ ছাড়া নাজমুল হাসানের নাম এজাহারে নেই।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাদকের কারণে নয়, বরং ব্যক্তিগত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর বেশি কিছু তদন্তের স্বার্থে বলা যাচ্ছে না।’

পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক নয়ন বন্ডের নামে মাদক, হামলা, ছিনতাই এবং চুরির আটটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া রিফাত ফরাজীর নামেও চারটি মামলা রয়েছে বরগুনা থানায়।’

এসব মামলার পরও প্রকাশ্যে অপরাধ করে বেড়ানোর সাহস হত্যাকারীরা পায় কোথায়-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রতিটি অপরাধের পরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এলে তখন পুলিশের আর কিছু করার থাকে না।’

আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক চাপ আছে কি না-এমন এক প্রশ্নের জবাবে মারুফ হোসেন বলেন, ‘এমন কোনো চাপের বিষয়ই নেই। পুলিশ পুরোপুরি স্বাধীনভাবে এসব হত্যকারীকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্তরে ফাঁদ পেতে রেখেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আসামিদের ধরা পড়তেই হবে।’

অন্যদিকে বরিশাল বিভাগের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ‘একজন হত্যাকারীও পার পাবে না। শুধু বরগুনায় বা বড় বড় শহরে নয়, গ্রামে-গঞ্জে, পুরো বাংলাদেশে আসামিদের জন্য রেড অ্যালার্ট দেওয়া হয়েছে। আশা করি, খুব শিগগির আমরা সব আসামিকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হবো।’