রাবিতে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ ভাস্কর্যের পাদদেশে মুখে কালো কাপড় বেঁধে এ দাবি জানান তারা।

শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এসময় তারা যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে বয়কট করার আহ্বান জানান। একই সাথে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান। কর্মসূচীতে ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বর্ষের ত্রিশের অধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে ইনস্টিটিউটের ৩য় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ইনস্টিটিউট যে তদন্ত কমিটি করেছে তার প্রতিবেদন এখনো জমা দেয়া হয়নি। এ রকম বিষয়ে বিলম্ব করলে সেটা ধামাচাপা পড়ে যায়। আমরা চাই না এটা ধামাচাপা পড়ে যাক। আমরা এর দ্রুত বিচার চাই।’

এর আগে ২৫ জুন আইইআরের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রী ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্যক্তের লিখিত অভিযোগ করেন। পরে দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইইআর পরিচালকের কাছে একই অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় পরদিন বিকেলে ইনস্টিটিউটের এক জরুরি সভায় অধ্যাপক বিষ্ণুকে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তবে ২৮ জুন অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা চেয়ে নগরীর মতিহার থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী (জিডি নং-১১০৮ ও ১১০৯)। ৩০ জুন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে অধ্যাপক বিষ্ণুর বিচার দাবি করেন।

১ জুলাই তার অব্যাহতির আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে ইনস্টিটিউটের সকল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তবে শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী।

তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, গত শনিবার আমরা একটি মিটিং করেছি। সেখানে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে কীভাবে এগোতে পারি, সে বিষয়ে আলাপ হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করেনি। তবে আজ (সোমবার) এখন পর্যন্ত যা যা হয়েছে তা প্রশাসনকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু বলেন, ‘ইনস্টিটিউট একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে। সেটা তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিবে। পরে তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। ওই প্রতিবেদন নিয়ে যদি প্রশ্ন উঠে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো নতুন তদন্ত কমিটি করবে।’