পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি যশোরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ঈদ আনন্দ মেলা শেষে ব্যবসায়ীদের মালামাল আটকে রাখার ঘটনায় পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রশাসন। ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথা শুনে শনিবার সকালে কোতয়ালি থানার ওসির সাথে সরাসরি দেখা করার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানায় অভিযোগকারী ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আরিফ।
এদিকে শনিবার দুপুরের মধ্যে পুলিশ মাঠ থেকে আয়োজক কমিটির ডেকরেটরের সকল মালামাল অপসারনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান।
সূত্র জানায়, ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ভিক্তিতে বৃহস্পতিবার রাতেই আয়োজক কমিটির প্রধান মিলনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দু’পক্ষকে নিয়ে শনিবার বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। অপরাধ যেই করুক তাকে শাস্তি পেতে হবে। এছাড়া শিগ্রই বিষয়টি সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি যশোরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ঈদ আনন্দ মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মাসুদুর রহমান মিলন ও তার পার্টনার শাহীন ওরফে মেলা শাহীনের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার মালামাল আটকে রেখে খুন ও জখমের হুমকি দিচ্ছেন বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ব্যাবসায়ীরা।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ এপ্রিল মেলা শুরু হওয়ার পর মাঝখানে ১০ দিন বন্ধ রেখে গত ২২ জুন পর্যন্ত মেলা চলে। এর মধ্যে মেলা বন্ধ হয়ে গেলে মেলাটি পুনরায় চালু করার জন্য তাদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নেয়া হয়। পরে মেলা শেষ হলে ছাড় পত্র আনতে গেলে তাদের কাছে পাওনা টাকার থেকে কয়েকগুন টাকা দাবি করে তাদের দোকানের সকল মালামাল মেলার মাঠ থেকে নিয়ে চলে যায়। পরে তাদের মালামাল ফেরত চাইলে নানা ধরনের তালবাহানা করতে থাকে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই রাত আটটার দিকে মেলার সামনে আয়োজক কমিটির সাথে দেখা হয়। এসময় আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মিলন ওই মালামাল ফেরত দেয়া হবেনা বলে মারপিট ও খুন জখমের হুমকি দেয়।
তারা অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ২২ দিন ধরে সব মালামাল আটকে রাখার কারনে তারা এখন পরিবার নিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়ে পরেছে। এসব বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।
এদিকে শুধু মেলার ব্যবসায়ীরায় নয় মেলার ডেকরেটর মালিক ও ক্ষোভ প্রকাশ কেরেছন আয়োজক কমিটির উপর।
মেলায় যেয়ে দেখা যায়, ২১ দিন মেলা শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত মেলার ডেকোরেশন খোলা হয়নি। এখনো বাশ দিয়ে মেলায় প্যান্ডেল সাজানো রয়েছে। এ বিষয়ে প্যান্ডেল মালিক জাকির হোসেন বলেন, মিলনের সাথে এ মেলায় ৪২ টি দোকান করতে হবে ও এসব দোকান একমাস থাকবে এ হিসাবে চার লাখ টাকার চুক্তি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ৬৫ টি দোকান তৈরী করিয়ে নেয়। এছাড়া এক মাসের কথা বলে মেলা চলে প্রায় দু’মাস। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র দু লাখ টাকা দিয়েছে মিলন। বাকী চার লাখ টাকা নিয়ে শুধু ঘুরাচ্ছে। আজ না কাল করে ২২ দিন হলেও বাকী টাকা দিচ্ছেনা। মিলনের মোবাইলে ফোন দিলে ফোন ধরে না।
জাকিরের কাছে টাকা না থাকায় তিনি মেলা থেকে ডেকরেশনের বাঁশ খুটি খুলে আনতে পাছেন না বলে জানান।
এদিকে আরেক দোকানী আলামিন জানান, মেলা করার জন্য তিনি পাঁচ লাখ টাকার মালামাল যশোরে পাঠায়। যে দোকান তাকে দেয়ার কথা ছিল মেলা কমিটি সে দোকান তাকে দেয়নি বলে তিনি আর মেলাতে আসেনি। কিন্তু মাল ফেরত আনতে গেলে তা আর দেয়নি। ওই পাঁচ লাখ টাকার মাল মিলন ও মেলা শাহীন এক মেলা দোকানীর কাছে বিক্রি করে দেন বলে তিনি জানান।