চার কোটি টাকা লুট, বিকাশের ৭ কর্মীর নামে মামলা

সাতক্ষীরায় এক হাজারেরও অধিক গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় চার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে বিকাশের জেলা ম্যানেজার ও ডিস্ট্রিবিউটরসহ অফিস সহকারীরা। এ ঘটনায় বিকাশের সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজার, ডিসট্রিবিউটরসহ সাতজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত বিকাশ এজেন্টদের পক্ষে সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি শহরের আদর মোবাইল সেন্টারের কাজী আক্তার হোসেন মামলাটি দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।

মামলার আসামিরা হলেন, বিকাশের সাতক্ষীরা জেলা শাখার ম্যানেজার সজল কুমার, ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, রানা, ফারুক হোসেন, তার বাবা মতিয়ার রহমান, ভাই ইয়াছিন আরাফাত ও আফিদ্রী। ডিস্ট্রিবিউটর ফারুক হোসেনের বাড়ি শহরের কাটিয়া এলাকায়।

সাতক্ষীরা শহরের সংগীতা মোড় এলাকার ব্যবসায়ী রাজধানী ইলেকট্রনিক্সের স্বত্ত্বাধিকারী কামালনগর এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী জানান, আমার দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছি। কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছি না। আমার টাকা কি হবে ? আমি আর বিকাশের ব্যবসা করবো না। আমি আমার টাকা ফেরৎ চাই।

অন্যদিকে, বিকাশের এজেন্টদের সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি শহরের আদর মোবাইল সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী কাজী আক্তার হোসেন জানান, আমার প্রায় এক লাখ টাকা নিয়ে গেছে। জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রায় দেড় হাজার বিকাশ এজেন্টদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাদের কোনো হদিস নেই।

তিনি আরও বলেন, সোমবার থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ। সাতক্ষীরার শাখা অফিসটিও তালাবন্ধ। আমরা এজেন্টরা টাকা ফেরৎ চাই। গরিব মানুষদের টাকা এভাবে বিকাশের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা নিয়ে তাদের পথে বসিয়ে দেবে সেটা হতে পারে না। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা টাকা উদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, সোমবার টাকা নিয়ে বিকাশের সাতক্ষীরা জেলা ডিস্ট্রিবিউটর ফারুক হোসেন পালিয়ে যান। একত্রিত হয়ে বিকাশের এজেন্টরা হাজির হন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে। পরে এজেন্টদের বিক্ষোভের মুখে বিকাশ সাতক্ষীরা অফিস থেকে তিনজনকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ।

শহরের আদর এন্টারপ্রাইজ, সোহেল এন্টরপ্রাইজ, বুলবুল টেলিকম, মোবাইল প্যালেস, আহানাজ ফটো, কেসিও ওয়াচ, জয়া এন্টারপ্রাইজ, খোকন বুক ডিপো, রমজান টেলিকম, রাজু টেলিকম, রাজধানী এন্টারপ্রাইজ, জননী স্টোর, একে ইলেকট্রনিকস, তোহা মোবাইল, আরজু এন্টারপ্রাইজ, সাদিয়া এন্টারপ্রাইজ, সুমাইয়া টেলিকম, মামুন এন্টারপ্রাইজ, রেজা এন্টারপ্রাইজ, তানভির স্টোর ও স্বপন এন্টারপ্রাইজ ছাড়াও জেলার দেড় হাজার বিকাশ এজেন্ট প্রতিনিধিরা প্রতারণার শিকার হয়ে পথে বসেছেন।

এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিকাশের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধারে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সোমবার বিকাশের অফিস থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা ইব্রাহিম হোসেন, বিশ্বজিত ও মো. মাসুম বিল্লাহ অফিসের পিওন হিসেবে সেখানে দায়িত্ব পালন করে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দায়ের না করায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।