ফিল্মি স্টাইলে যশোরে আদালত চত্তর থেকে বৃদ্ধকে অপহরণ

jessore map

যশোর জজ আদালত চত্তর থেকে ফিল্মি স্টাইলে এক বৃদ্ধকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক বৃদ্ধার মেয়ে যশোর কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কোতোয়ালী থানার তদন্ত ওসি সমীর কুমার সরকার তাৎক্ষনিক বিষয়টি আমলে নিয়ে চালান। অবশেষে সন্ধায় চৌগাছা থানা পুলিশ চৌগাছা থেকে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে হস্তান্তর করেন। অপহৃত ব্যক্তি চৌগাছা উপজেলার বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা মোঃ রফিউদ্দীন (৬৫)।

স্থানীয় সুত্র জানায়, অহহৃত রফিউদ্দিনের নাতি জামিলের সাথে উপজেলার মাশিলা গ্রামের আলাউদ্দীনের মেয়ে জিনিয়া আরেফিন জোতির(১৮) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায় কাউকে না জানিয়ে জামিল ও জোতি গত ১৬ মে বিয়ে করে শার্শার জামিলের এক আত্মীয়র বাড়িতে ওঠেন। এ খবর শোনা মাত্রই আলাউদ্দীন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই আত্বীয় বাড়ি থেকে মেয়েকে তুলে আনেন। এর কয়েকদিনের মাথায় ফের জোতি প্রেমিক জামিলের হাত ধরে অজানায় পারি দেয়। এরপর মেয়ের পিতা আলাউদ্দীন জামিল, জামিলের বাবা দেলোয়ার, মা দুলি খাতুন সহ স্থানীয় মাদানী ও শাবদুলকে আসামি করে চৌগাছা থানায় অপহরণ মামলা করেন। এরপর পুলিশ জামিলের মা, বাবাকে আটক করে। ছেলের প্রেমের কারনে তারা কয়েক দিন জেল খাটেন।

আদালত সূত্র জানায়, এক পর্যায় মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট হয়ে জেলা জজ আদালতে আসে। বিষয়টি জেলা জজের নজরে আসেন। তিনি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিষয়টি মিমাংশার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। এদিন ছেলে ও মেয়ে সহ উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে মিমাংশা হওয়ার কথা ছিল। এক পর্যায় আদালত আগামি ৪ আগষ্ট এ মামলার পরবর্তি দিন ধার্য করেন।

এ বিষয়ে জামিলের মা দুলি জানান, বিচারকের আদেশে তারা এদিন আদালতে এসেছিলেন। এসময় তারপিতা রফি উদ্দিনও তাদের সাথে এসেছিলেন। কিছু সময়ের জন্য তিনি নিচে গিয়েছিলেন। তার বাবাকে একা পেয়ে জোতির বাবা তার সন্ত্রাসী দিয়ে গাড়িতে করে উঠিয়ে নিয়ে যায়। অজ্ঞাত স্থানে তার বাবকে উঠিয়ে নিয়ে মারপিট করতে থাকে আলাউদ্দিন। একই সাথে আলাউদ্দিনের সন্ত্রাসী বাহিনী চৌগাছায় তাদের বাড়িতেও তান্ডব চালায়। সে সময় তারা যশোর আদালতেই ছিলেন। এসময় তার মেয়েকে লাঞ্চিত করে সন্ত্রাসীরা। ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে। কিছুক্ষনপর মোবাইল ফোনে হুমকি দেয় জোতিকে ফিরিয়ে না দিলে বৃদ্ধ রফিকে হত্যা করা হবে। এরপর জামিলের মা সেলিনা বেগম দুলি কোতোয়ালী থানা পুলিশের দারস্থ হয়। পুলিশ তদন্ত করে নিশ্চিত হয় বৃদ্ধ রফিকে চৌগাছা কোথাও আটকে রাখা হয়েছে। এরপর চৌগাছা থানা পুলিশ উদ্ধার কাজ শুরু করে সন্ধায় বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে ওই মামলার অপর দু’আসমি মাদানী ও শাবদুল জানান, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। জামিল জোতি প্রেম করে বিয়ে করেছে আর বিনা কারনে ধখল পোহাতে হচ্ছে তাদের। মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এখানে সেখানে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে তারা জানান।