আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে যশোরের মণিরামপুরে ঠান্ডাজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই শতশত শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছে। আবার জটিল অবস্থা নিয়ে কেউ কেউ ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্বজনদের।
অভিযোগ করা হচ্ছে, সরকারি হাসপাতাল হলেও এখানে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে রোগীদের বেশিরভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এছাড়া রোগীর স্বজনদের সাথে নার্সদের খারাপ আচরণ যেন এখানকার নিত্য দিনের চিত্র।
গত বৃহস্পতিবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আট মাসের শিশু আবু হুযাইফাকে মণিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম। দুই দিনে প্যারাসিটামল ও জিংক সিরাপ ছাড়া কোন ওষুধ তারা হাসপাতাল থেকে পাননি। শনিবার সকাল পর্যন্ত তিনি ছেলের জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকার ওষুধ কিনেছেন।
একই অভিযোগ শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী লামিমের মা শাহানাজের। তিনি বলেন, জ্বর হওয়ায় তিনি দিন আগে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ছেলের খিচুনি দিয়ে জ্বর আসছে। সকালে ছেলে জ্বরে কাঁপছিল। আমি নার্সদের ডাকতে গেলে তারা আসিনি। উল্টো বকাঝকা করেছে। নার্সদের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ এনেছেন পাশের বেডের রোগীর স্বজনরাও।
মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃ বিভাগের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. তহিদুল হাসান বলেন, অতিরিক্ত গরমের মাঝে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে নিয়মিত জ্বর, বমি, পায়খানা ও সর্দি-কাঁশিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত এক সম্পাহে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গড়ে প্রতিদিন একশ’ শিশু বহঃ বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। জটিল পর্যায়ে প্রতিদিনই ১০-১৫ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় মাঝেমধ্যে বাইরে থেকে কিছু ওষুধ কিনতে হচ্ছে। রোগীর স্বজনদের সাথে নার্সদের খারাপ আচরণের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।