যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইচআইভি এইডস আক্রান্ত এক প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। একদিকে প্রসূতির চিকিৎসা পাওয়ার মানবিক প্রয়োজন, অন্যদিকে অস্ত্রোপচার থিয়েটারে সংক্রমণ ঝুঁকি এবং চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তা এই দুই দিক নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে এই নারীর দেহে এইডস শনাক্ত হয়। সে সময় তিনি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বর্তমানে তাঁর সিজার প্রয়োজন। গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার প্রথমে ২৮ মে অপারেশনের দিন নির্ধারণ করেন। কিন্তু স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে অপারেশন স্থগিত করা হয়। নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে রোববার (১ জুন)। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই অপারেশন হলে অপারেশন থিয়েটার অন্তত তিন দিন বন্ধ রাখতে হতে পারে। ফলে প্রতিদিনের ১৫-২০টি গাইনি, ৭-১০টি সার্জারি, ৬-৮টি অর্থোপেডিক্স, ৩-৫টি ইএনটি এবং ২-৫টি ডেন্টাল অপারেশন বাধাগ্রস্ত হবে। এতে অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “অপারেশন নয়, চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ। রক্ত ও তরলের নিষ্কাশন ও পরিশোধনের জন্য এখানে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই।”
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, “ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ২৮ মে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এখন গাইনি বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে।”
গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার বলেন, “রোগী আসলে তার চিকিৎসা করা ফরজ। তাকে নিরাপদ রাখা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। আমরা রোববারের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, “এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত রোগীর সিজার সাধারণ হাসপাতালে করা ঝুঁকিপূর্ণ। সংক্রমণ প্রতিরোধে সুরক্ষিত বিশেষায়িত হাসপাতালে অপারেশন করাই উচিত।”
চিকিৎসক মহলে মতানৈক্য থাকলেও সময়ের চাপে সিদ্ধান্ত নিতে হবে খুব শিগগিরই। রোববারের মধ্যে হয় অপারেশন হবে, নয়তো রোগীকে রেফার করা হবে বিশেষায়িত হাসপাতালে।