‘হাতে দুই প্যাকেট খাবার ধরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে’

অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে ভারতীয় বাঙালিরা। গত ৩১ আগস্ট আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করায় রাজ্যটির প্রায় ১৯ লাখ অধিবাসী তাদের নাগরিত্ব হারিয়ে বসেছেন।

একইভাবে পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি করার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। যার শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করার অনুমতি দেবেন না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।

তবে মমতার এসব হুশিয়ারিকে তোয়াক্কা না করে বিজেপির বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু করা হবে। আর যেসব মানুষ এনআরসি থেকে বাদ পড়বেন তাদের হাতে দুই প্যাকেট খাবার ধরিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’

শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই বিজেপি নেতা।

তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশিদের ধরে রাখতেই পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দিতে রাজি হচ্ছেন না মমতা।

তিনি মমতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ থেকে আসা নাগরিকদের ভোট নিজের করে নিতেই মমতা এনআরসির বিরোধিতা করছেন। ’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করে কেন্দ্রে সুরেন্দ্র সিং আরও বলেন, ‘এটা নিশ্চিত যে পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি হবে। মমতা যদি বাংলাদেশিদের ধরে রাখতে চান তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করা উচিত তার।’

তাই এনআরসি প্রয়োগ করে যারা ভারতের নাগরিক হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করবেন না তাদের সম্মানজনকভাবে নিজেদের দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, ‘মমতা শত বাধা দিলেও পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি কার্যকর করা হবে এবং সব বাংলাদেশির হাতে দুটি খাবাবের প্যাকেট ধরিয়ে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’

এরপর হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ থেকে উদাহরণ টেনে আনেন সুরেন্দ্র সিং।

তিনি বলেন, ‘লংকার মানুষ হনুমানজিকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। তবু তিনি সেখানে প্রবেশ করেছিলেন এবং লংকা জয় করেছিলেন। একইভাবে যোগী আদিত্যনাথ ও অমিত শাহও পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছেন এবং অনেক আসন জয় করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই লংকার রাবণ। সেখানে রাম (বিজেপি সরকার) পা রেখেছেন। শিগগিরই পুরো পশ্চিমবঙ্গ জয় করবে বিজেপি।’

প্রসঙ্গত, শুরু থেকেই বিজেপি সরকারের কার্যক্রম এনআরসির বিরোধিতা করে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসামে এনআরসির ব্যাপক বিরোধিতা করেছেন তিনি। সেখানে হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গে কোনোভাবেই এনআরসি করার অনুমতি দেবেন না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতার সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন তিনি। সূত্র: এনডিটিভি