যশোর আ’লীগকে দুর্বল করতে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে : শাহীন চাকলাদার

যশোর জেলা আওয়ামী লীগকে দুর্বল ও বিতর্কিত করতে আগামী সম্মেলনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার।

গতকাল মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাসহ রাজপথের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশের পর আজ বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে শাহীন চাকলাদার এই দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোড মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে, তখনই একটি বড় ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুর্বল করতে সেই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মীদের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালানো হচ্ছে। যার অংশ হিসেবে ‘হলুদ সাংবাদিকতা’ হিসেবে যশোর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন চাকলাদার প্রকাশিত ওই রিপোর্টটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক উল্লেখ করে বলেন, ‘ওই সাংবাদিক আমার সম্পদ সম্পর্কে যে তথ্য সরবরাহ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই আমাদের পারিবারিক ব্যবসা ছিলো। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আমার নাকি শত শত বিঘা জমি আছে। কিন্তু এই তথ্য একেবারেই সত্য নয়। সম্পদের প্রকৃত তথ্যের জন্য ইনকাম ট্যাক্স অফিস, ব্যাংকসহ বিভিন্ন অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত। কিন্তু তারা তা না করে মনের মতো করে লিখে দিয়েছে। যা অত্যন্ত মানহানি ও আপত্তিকর। পত্রিকায় আমার যেসব জমির আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আমি তা ওই প্রতিবেদনকে এই সংবাদ সম্মেলন থেকে দিয়ে দিলাম।’

বিতর্কিতদের জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পাওয়ার বিষয়ে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘বিতর্কিত কোন ব্যক্তি আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পাননি। ওই সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা একেএম খয়রাত হোসেনকে জামায়াতের রোকন বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে খয়রাত হোসেন বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার কারণে পাকিস্তান বাহিনী তার মাথার দাম ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করে। আরেক সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছিলেন বলে লেখা হয়েছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে তিনি ১৯৭২ সালে যশোর সরকারি এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। পরের বছর জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হন। পঁচাত্তর পরবর্তি জেলা আওয়ামী লীগের সব কমিটিতে তিনি সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এবং সফলতার সাথে তা পালন করেছেন।’

‘মূলত আওয়ামী লীগকে দুর্বল করতে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনকে সামনে রেখে এই মিথ্যা প্রতিবেদনটি পত্রিকায় প্রকাশ করানো হয়েছে। যারা এসব কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রার্থী তাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা প্রতিবেদন লেখানো হয়েছে।’ যোগ করেন শাহীন চাকলাদার।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘আমরা ওই প্রত্রিকায় প্রতিবাদ দেবো না। কারণ ওই পত্রিকার সম্পাদকের সাথে আমার কথা হয়েছে। তাকে আমি বলেছিলাম সরেজমিনে এসে প্রকৃত সত্যা ঘটনা তুলে ধরেন। কিন্তু তিনি তা না করে মিথ্যার বেসাতি সাজিয়েছেন। এজন্য আমরা মানহানির পাশাপাশি সিভিল মামলাও করবো। যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে সবাই মামলা করবেন।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘আমি ও আমার কর্মীরা নাকি ওয়ানটেন নামে একটি জুয়া পরিচালনা করি। যা একেবারেই ডাহা মিথ্যা। এর সাথে আমার একেবারেই কোন সম্পর্ক নেই। আমি একে ঘৃণা করি।’ এসময় তার সম্পাদিত পত্রিকা দৈনিক সমাজের কথার একটি কপি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে আমি জানতে পেরে এই ওয়ানটেনের বিরুদ্ধে আমার পত্রিকায় প্রতিবেদন লিখেছিলাম। আমি যদি এর সাথে যুক্ত থাকি তাহলে আমার পত্রিকায় কেন রিপোর্ট লিখবো?’ প্রশ্ন ছুড়ে দেন শাহীন চাকলাদার।