আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন রাবি উপ-উপাচার্য, দাবি অধ্যাপক হান্নানের

ru logo

সেই দুই লক্ষ টাকার ব্যাখ্যা দিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হান্নান। নিজেকে রক্ষা করতেই উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দায় চাপিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন বলেও দাবি করেছেন অধ্যাপক হান্নান। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ২৪৫ নং কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি আজ এ বক্তব্য দেন। সেখানে জাকারিয়া বলেছিলেন, চাকরি প্রত্যাশীর সাথে অধ্যাপক হান্নান দুই লক্ষ টাকা লেনদেন করেছেন।

অধ্যাপক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘নুরুল হুদার সাথে আমার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক। তাই তার কাছে টাকা ধার চেয়েছিলাম। ধার নেয়ার সময় নির্ধারিত এক সপ্তাহের মধ্যেই তা শোধ করে দেই। বিষয়টিকে কোনভাবেই চাকুরীর সাথে সম্পৃক্তের সুযোগ নেই। আইন বিভাগের নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৩ নভেম্বর ২০১৮। অথচ আমি ১২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে ধার পরিশোধ করি।’

এসময় সাংবাদিকদের হাতে দেয়া এক বিবৃতিতে ব্যাংক একাউন্টের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ডিসেন্ট ট্রেডার্সের একাউন্টটি একটি যৌথ চলতি একাউন্ট। প্রথমে আমার নামে পরিচালিত হলেও পরবর্তীতে মো. শফিকুল ইসলাম ও আমার যৌথ নামে পরিচালিত। এটি মূলত মির্জাপুরে আমাদের দুজনের ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য ব্যাংক হতে ঋণ ও অন্যান্য উৎস হতে গৃহীত টাকা লেনদেনের সুবিধার জন্য খোলা হয়।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘চাকুরী না হওয়ার পর টাকা ফেরৎ চেয়ে ডিসেন্ট ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারীর সঙ্গে চাকুরি প্রত্যাশী নূরুল হুদার ফোনালাপ সংযুক্তি-৪ হিসেবে সিডি আকারে প্রদর্শিত হয়েছে। এখানে সরাসরি মিথ্যা তথ্যের অবতারনা করা হয়েছে। ০৯/১১/২০১৮ তারিখের ফোনালাপে নূরুল হুদা ধার দেয়া টাকার কথাই উল্লেখ করেছে। উক্ত রেকর্ডেও নুরুল হুদা বারবার ‘ধার’ শব্দটিই উচ্চারণ করেছে। উক্ত ধার চাকুরীর নিয়োগ বোর্ডের পূর্বেই পরিশোধ করা হয়েছে। সুতরাং নিয়োগ না হওয়ায় টাকা ফেরৎ চাওয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণই মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর ব্যাখ্যা আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রো-ভিসি মহোদয়ের নিকট প্রত্যাশা করছি। অন্যথায় আমার সুনাম ক্ষুণœকারী মিথ্যা বিবৃতি প্রকাশের জন্য আমার আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের অধিকার রয়েছে।’

অধ্যাপক হান্নান বলেন, মাননীয় প্রো-ভিসি মহোদয় কর্তৃক প্রদত্ত বিবৃতি ও সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যের কারণে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আইন বিভাগসহ আমার মান-সম্মান ক্ষুণœ করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চোধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে চাকরি প্রত্যাশী প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত মোহাম্মদ নুরুল হুদার স্ত্রীর ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফোনালাপ ফাঁসের পরপরই দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। উপ-উপাচার্যের সংবাদ সম্মেলনের আগের দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন। একই দিন মানববন্ধন ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পূজার ছুটির পর লাগাতার আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন শিক্ষকরা। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ৫৮ শিক্ষক। বিবৃতিতে ‘দুর্নীতিবাজ এবং নিয়োগ বাণিজ্যের নিবেদিত’ প্রশাসকদের অপসারণ দাবি করেন তারা।