সাকিবের নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক: মির্জা ফখরুল

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নয়াপল্টনে বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সাকিব আমাদের দেশের ক্রিকেটের একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাকিবের সঙ্গে যা ঘটল তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও কষ্টদায়ক। তার সঙ্গে এমন ঘটনায় ক্রিকেট অনুরাগীরা ব্যথিত। কারণ আগামী এক বছর তারা সাকিবের খেলা দেখতে পারবেন না। আমরা আশা করব এই ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।

ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিতে অনেক রকম সমস্যা আছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে জুয়াড়িদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে আইসিসিরও সম্পর্ক থাকে। সাকিব একজন বিশ্বমানের অলরাউন্ডার। জানি না তার সঙ্গে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা। আশা করি, সাকিব তার পুরনো ফর্ম নিয়ে শিগগিরই মাঠে ফিরে আসবেন, দেশকে জয়ী করবেন।

উল্লেখ্য, জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর তা গোপন রাখার কারণে সাকিবের ওপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইসিসি। তবে দোষ স্বীকার করে আইসিসিকে সহায়তা করায় এক বছর পরেই মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি।

ক্রিকেট খেলোয়াড়দের সাম্প্রতিক আন্দোলন ও বিসিবির কার্যক্রম সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেখুন আমি আপনাদের আগেই ইঙ্গিত দিয়েছি যে, এই ধরনের বিষয়গুলোতে অনেক রকমের চক্রান্ত থাকে, ষড়যন্ত্র থাকে। একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে বিপদগ্রস্ত করার ব্যাপার থাকে। এসব তদন্তের মধ্যে বেরিয়ে আসবে। আমি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে চাই না। কারণ আমার কাছে এ বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ নেই। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা ক্রিকেটেও ঘটে।

ক্রীড়াঙ্গনে যে অস্থিরতা চলছে সেটা দেশের সামগ্রিক অবস্থার প্রতিফলন এমন দাবি করে ফখরুল বলেন, সরকার যেভাবে দেশ চালাচ্ছে এতে করে কাউকে তো কোনো জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে না। প্রত্যেক ফেডারেশনের এখন মানি আর্নিংয়ের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। চিন্তা করে দেখুন, প্রায় প্রত্যেকটা ক্লাবই ক্যাসিনো চালায়। এটা তাদের নলেজে ছিল না, ফেডারেশন জানে না, বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিবি) জানে না, ফুটবল ফেডারেশন জানে না, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানে না, ক্রীড়ামন্ত্রী জানেন না। তাহলে এতদিন ধরে কীভাবে চলল? নীতিনির্ধারকরা জানেন না তা অবিশ্বাস্য। অর্থাৎ সরকারের আসলে পুরো শাসন নেই, কমপ্লিটলি তারা ব্যর্থ। দুঃশাসন ছাড়া কোনো সুশাসন নেই, সুশাসনের অভাবের কারণে এই বিষয়গুলো হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে বাণিজ্যের যে ভারসাম্য সেটা রক্ষা করা হচ্ছে না। এক কথায় আমরা পুরোপুরি নতজানু এবং পরনির্ভরশীল হয়ে গেছি। মিয়ানমার থেকে ১০ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে, তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য কিছুই করা হচ্ছে না। বিশেষ করে ভারতে আমাদের দেশের যেসব মানুষ বসবাস করছেন তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিনটি হচ্ছে ৭ নভেম্বর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন দেশের সবকিছু ধ্বংস করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তখন ৭ নভেম্বর ছিল তারই প্রতিবাদ। আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই দিনটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ওইদিন যে বিপ্লব রচিত হয়েছিল, আজ তেমনি সময় এসেছে। আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আবারও বিপন্ন হয়েছে। আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি না, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হচ্ছে না, আমাদের সমুদ্র উপক‚লে রাডার বসাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ কিন্তু আমরা এ বিষয়ে জনগণকে বিস্তারিত কিছুই বলতে পারছি না।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা অনেক খারাপ হলেও হাসপাতালের পরিচালকরা তা অস্বীকার করছেন।