যশোরের রূপদিয়ায় চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা

jessore map

পুলিশ আর রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয়ে যশোরের রূপদিয়ায় রমরমা মাদক ব্যবসা চলছে। ফলে রূপদিয়া এখন মাদকের এলাকায় পরিণত হয়েছে। এখানে হাত বাড়ালেই মেলে মাদক। এমন কোন মাদক নেই যা পাওয়া যায় না। মাদক কারবারীরা ফেরি করে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে। পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বখরা নিয়ে মাদক ব্যবসায় সহায়তা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে মাদক কারবারীরা। বলতে গেলে এখন পুলিশ আর মাদক ব্যবসায়ীদের পোয়া বারো।

অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সাথে যোগসাজসে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী রূপদিয়ায় মাদকের বিস্তার ঘটিয়েছে। দিন-রাত সমান তালে এখানে মাদক ব্যবসা চলছে। এছাড়া মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায় চলছে। শহরতলী স্বল্প সময়ে যাওয়া-আসার কারণে প্রতিদিন শহর থেকে মানুষ মাদক সেবন করতে রূপদিয়ায় যায়। নিরাপদ হওয়ায় মাদক সেবীরা স্বাচ্ছন্দে এখানে মাদক সেবন করে থাকে।

সূত্র মতে, বিভিন্ন সময় মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক ব্যবসায়ীরা ছাড়া পেয়ে ফের চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা। আর এসব মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের বখরা নিয়ে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে পুলিশ। গত ৫ অক্টোবর মোহাম্মদীয়া প্লাজার নিচ থেকে মাদক ব্যবসায়ী রিয়াজকে ২০ বোতল বিয়ার ও ৫০ পিচ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। রিয়াজ দীর্ঘদিন ধরে চা দোকানের আড়ালে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এমন খবরে স্থানীয় নরেন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোর্তজা অভিযান চালায়। সেখানে হাতে-নাতে বিয়ার ও ইয়াবাসহ রিয়াজকে গ্রেফতার করে। রিয়াজকে আটকের পর বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়। সম্প্রতি কমিউনিটি পুলিশের এক সভায় মাদক ব্যবসায়ীদের আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা। সাথে সাথে কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড়ার বিষয়ে জানতে চান। এরপর ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। পরে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম বিশ্বাস ও ফাঁড়ির ইনচার্জ মোর্তজা ৫০ হাজার টাকার রফাদফার মাদক ব্যবসায়ী রিয়াজের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরে ওই টাকা ফেরত দেওয়া হয় বলে সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, রূপদিয়া বাজারের কাচাবাজারের নিচে, রূপদিয়া কলেজের আশে-পাশে, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক ওপেন সিক্রেট হয়ে পড়েছে। বর্তমান নরেন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোর্তজা দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এখানে মাদক ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয়দেও অভিযোগ।

এ ব্যপারে যোগযোগ করা হলে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী জানান, এ রকম অভিযোগ আমি শুনেছি। কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত সমীর কুমার বিষয়টি তদন্ত করছে। সে রিপোর্ট দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।