বন্ধের নির্দেশ না মেনে আন্দোলনে জাবি শিক্ষার্থীরা

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয় বন্ধ ও হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের বেধে দেয়া সময়ে তারা হল ত্যাগ না করে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের রাস্তায় নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবক’টি আবাসিক হলের ছাত্রছাত্রীরা এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ। গতকাল রাতের ঘোষণা অনুযায়ী আজ সকাল থেকে আবারও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও আসতে শুরু করেছেন শিক্ষকরা। এর আগে সকালে কিছু শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে জড়ো হতে শুরু করলে সেখান থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।

শহীদ মিনারের সামনে ব্যানার ফেস্টুন হাতে তৈরি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই ভিসির বাড়ির সামনে দেখা যায় প্রায় শতাধিক পুলিশ সদস্য। সশস্ত্র পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সচেষ্ট রয়েছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, হল ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া সত্ত্বেও তারা হলে অবস্থান করছেন। ভাসানী হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের জন্য একত্রিত হচ্ছেন বলেও জানান একাধিক শিক্ষার্থী। তারা কিছুক্ষণের মধ্যে একত্রিত হয়ে আন্দোলনে যোগ দেবেন। এই হলের ইমরান আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রীতিলতা হলের সামনে একত্রিত হতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গতকাল রাতে তালা ভেঙে বেশ কয়েকটি হলের ছাত্রীরা বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এদিকে আজ সকাল থেকে আবারও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে গতকাল মধ্যরাতে নিজ নিজ হলে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) এর সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল এবং পরে শহীদ মিনারে সংহতি সমাবেশ করা হবে। সমাবেশের পরে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে রাত পৌনে ১০টার দিকে ভিসির অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনে হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে বেগম সুফিয়া কামাল হল ও প্রীতিলতা হলের গেটের তালা ভেঙে মিছিল বের করেন ছাত্রীরা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকেও এ সময় ছাত্রীরা বের হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেন অন্যান্য সহপাঠীরাও।

এছাড়াও রাত ৮টার কিছু পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে আরও একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুটি মিছিল একত্রিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে ভিসি বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। তখন হলের গেটের তালা ভেঙে বেরিয়ে মিছিলে যোগ দেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, প্রীতিলতা হল, সুফিয়া কামাল হল, জাহানারা ইমাম হল ও ফয়জুন্নেছা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরাও।