রক্ষা করলাম আমি, শান্তিতে নোবেল পেল আরেকজন: ট্রাম্প

trump

গত বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে উপেক্ষার শিকার হয়েছেন, সম্ভবত এমনটিই মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার ওহাইওর টোলেডোতে এক প্রচারণা অনুষ্ঠানে সমর্থকদের সঙ্গে তার বলা কথার একটি ভিডিও ক্লিপ টুইটারে শেয়ার হয়েছে, সেখানে তার বক্তব্যে এমনটিই প্রকাশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “এবার আমি আপনাদের নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিষয়ে বলবো, এ বিষয়টি নিয়ে বলবো। আমি একটি চুক্তি করেছি, একটি দেশকে বাঁচিয়েছি, তারপর মাত্র শুনলাম যে ওই দেশটির প্রধান দেশটিকে রক্ষার করার জন্য এখন নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন।

আমি বললাম: ‘কী, এর সঙ্গে আমার কিছু করার ছিল?’ হ্যাঁ, তবে আপনারা জানেন, এটি এমনই। ওই বিষয়ে আমরা যতদূর জানি, আমি বড় একটা যুদ্ধ বাঁচিয়েছি, আমি তাদের কয়েকটিকে বাঁচিয়েছি।”

ট্রাম্প এমন কথা বললেও ওই নোবেল জয়ীর নাম বা দেশটির নাম নেননি। কিন্তু তিনি ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের কথা বলছিলেন এটি পরিষ্কার।

কারণ ২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আবিই একমাত্র সরকার প্রধান যিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন।

অক্টোবরে গত বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিজয়ী হিসেবে আবির নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি। ১০ ডিসেম্বর নরওয়ের রাজধানী ওসলোতে পুরস্কার গ্রহণ করেন আবি।

ইথিওপিয়ার ৪৩ বছর বয়সী এই প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকার সবচেয়ে কম বয়সী সরকার প্রধান। কয়েক মাস ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে তার পূর্বসূরী পদত্যাগ করলে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ক্ষমতায় আসেন তিনি।

ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে ইথিওপিয়ার জনগণের মধ্যে ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ইথিওপিয়া-ইরিত্রিয়া সীমান্তে যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দেন।

আফ্রিকার দরিদ্র এ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ১৯৯৮ সালের মে মাস থেকে ২০০০ সালের জুন মাস পর্যন্ত এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে প্রায় লাখখানেক লোক নিহত হয়। ২০০০ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ২০১৮ সালের জুলাইয়ের আগে যুদ্ধাবসানের কোনো চুক্তি হয়নি।

আবি আহমেদের উদ্যোগে ওই বছর দুই দেশ যুদ্ধাবসানে একটি শান্তি চুক্তিতে উপনীত হয়। এই চুক্তিই তাকে নোবেল পুরস্কার এনে দেয়।

পাশাপাশি আবি আফ্রিকার অন্যান্য দেশের শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন, এটিও বিবেচনায় নিয়েছিল নোবেল কমিটি।

ইরিত্রিয়া-ইথিওপিয়ার শান্তি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব তেমন একটা ছিল না। এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছে আরব আমিরাত, আর যুদ্ধ থামাতে সৌদি আরবও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

আবির নোবেলে শান্তি পুরস্কার পাওয়ার প্রেক্ষাপট এমন হলেও কেনো ট্রাম্প এ সময় এসব মন্তব্য করেছেন তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

যা লক্ষ্যণীয় তা হল, নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ায় আবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জানাননি ট্রাম্প; কিন্তু তার কন্যা ও জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তবে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ ও নিজের অন্যান্য ভূমিকার জন্য তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত, প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য কয়েকবারই করেছেন ট্রাম্প।