রোহিঙ্গা গণহত্যা: আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠনে সুপারিশ করবে জাতিসংঘের দূত

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার বিষয়ে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ সমস্যা সমাধানে একটি অ্যাডহক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত বলে মনে করেন মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার ইয়াং হি লি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত এসব কথা বলেন।

ইয়াং হি লি বলেন, ‘জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস মিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সে প্রতিবেদন বাস্তবায়নের বিষয়ে আমি আমার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে শক্তভাবে সুপারিশ করব। কেননা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস মিশনের প্রতিবেদনে সত্য তথ্য উঠে এসেছে।’

আগামী মার্চে জেনেভাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে এই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেশ করবেন বলে জানান জাতিসংঘের বিশেষ এই দূত।

ইয়াং হি লি বলেন, ‘সিয়েরালিওন, রুয়ান্ডা বা বসনিয়া হার্জেগোভিনায় যেভাবে গণহত্যার বিচার হয়েছে, এক্ষেত্রেও একই ধরনের সুপারিশ করবো আমি।’

পাঁচ দিনের সফরে জাতিসংঘের এই বিশেষ দূত ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন। এরপর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে যান। ঢাকায় একাধিক বৈঠক করেন। আজ বাংলাদেশ ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে করেন।

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারকর্তৃক পরিচালিত গণহত্যায় আজ অন্তর্র্বতী ব্যবস্থার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বিচার চলছে। এ প্রসঙ্গে ইয়াং হি লি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কী হবে তা নিয়ে কোনও ধারণা করতে চাই না। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, যে সিদ্ধান্তই হোক, মিয়ানমারের উচিত হবে তা মেনে নেওয়া।’

এ সময় বিশেষ দূত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের পথ সুগম করতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন থাকবে যে, মিয়ানমারে ঘটমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার দলিলগুলো সংরক্ষণ করে নির্যাতিত, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর বিচার পাওয়ার পথ সুগম করতে উদ্যোগ নিন।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দুই সদস্য চীন ও রাশিয়ার সমালোচনা করে ইয়াং হি লি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন ও রাশিয়ার আচরণ লজ্জাজনক। নিরাপত্তা পরিষদে তাদের প্রতি যে দায়িত্ব ছিল, তা পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’