অপরাধী যেই হোক, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না: কাদের

obidul kader
ফাইল ছবি

বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার অপরাধকর্মের সঙ্গে থাকায় আলোচনায় রয়েছে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ বিব্রতবোধ করছে কিনা, জানতে চাইলে দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অপকর্মকারীকে আইনের আওতায় আনতে কখনো বিব্রতবোধ করি নি। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে দেখেছি। অপরাধীরা নজরদারিতে রয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না। তার প্রমাণ তিনি বারবার দিয়েছেন। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ বদলির ঘটনায় আওয়ামী লীগের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি আরও বলেন, আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, আইনের শাসনে বিশ্বাস করি, আমাদের স্ট্যান্ড থেকে একচুলও নড়িনি। আমরা আমাদের যে বিশ্বাস, আমাদের অঙ্গীকারের প্রতি শতভাগ আমাদের অবস্থানে অটল আছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে যদি কোনো বিষেেয় বিচ্যুতি বা ভুলবোঝাবুঝি হয়, সে বিষয়ে সমাধান তারাই করবে। এটা সম্পূর্ণ তাদের এখতিয়ার। এ বিষয় নিয়ে আমাদের দলীয়ভাবে মন্তব্য করা সমীচীন নয়। তবে আমাদের দলীয়ভাবে যদি কোনো বিচ্যুতি বা ভুলত্রুটি বা আইনের শাসনের পরিপন্থী কোনো কিছু হলে সেটা আমরা দলীয়ভাবে খতিয়ে দেখছি।

বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়-বিএনপির এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির এখন ইস্যু খুঁজে বেড়ানোর বিষয় ছাড়া তাদের হাতে অন্য কিছু নেই। তারা যেকোনো বিষয় থেকে ইস্যু খুঁজতে চায়। তারা খালেদা জিয়াকে নিয়ে ইস্যু খুঁজতে চাইছে। তারা নির্বাচন থেকেও ইস্যু খুঁজতে চায়। ইস্যু খোঁজা তাদের শেষ নেই। বিএনপির যে নেগেটিভ রাজনীতি, বিএনপির যে ইস্যু খোঁজার প্রতিযোগিতা, আমাদের কিছু করণীয় নেই। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি।

আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। এটা আইন ও বিচার বিভাগের বিষয়। এ বিষয়ে ব্যাখা আইনমন্ত্রী দিয়েছেন। তারাই বিষয়টি পরিস্কার করবেন। এখানে আমাদের দলীয় স্ট্যান্ডের সঙ্গে কোনো প্রকার অসামঞ্জস্য কিছু আমাদের দলের পক্ষ থেকে হতে দেব না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বিচার বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আইনমন্ত্রী অলরেডি তার বক্তব্য দিয়েছেন। এখানে উচ্চ আদালতে ইনভলমেন্ট রয়েছে, রুলিং আছে। কাজেই এটা আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের মধ্যে বিষয়টি চলছে। আমরা বিষয়টি মৌলিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা লক্ষ করছি, এখানে আমাদের দলীয়ভাবে যদি কেউ এ ব্যাপারে কোনো সমস্যার কারণ হয়।

মুজিববর্ষে ভারতের সরকার প্রধান নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আগমন নিয়ে বিভিন্ন ইসলামী দলের কর্মসূচিতে আইন-শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কিনা? জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সেরকম কিছু ভাবছিনা। আমরা মনে করি মুজিববর্ষের আয়োজন যথাযথভাবে এগিয়ে চলছে। ঐতিহাসিক আয়োজনে সারাদেশের মানুষের মাঝে সারা জেগেছে। মুজিববর্ষের আয়োজন স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষও বাধা বা প্রতিবন্ধকতার স্কোপ দেখছে না। যারা আবেগে বিষয়টির বিরোধিতা করছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলছেন। কিছু ব্যক্তি আছে যারা বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিতা করছে, যেমন বিএনপি। বঙ্গবন্ধুকে তাদের সহ্য হয় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাস্টারমাইন্ড তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তারা বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। তারা বঙ্গবন্ধুর উজ্জ্বলতা ঢেকে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা তা পারেননি।

এ সময় ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে সমন্বয়ক হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহাম্মদ মন্নাফি প্রমুখ।