এক ঘণ্টায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৪০ টাকা!

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে ৪০ টাকা কেজি দরে চার কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলেন গফরগাঁও পৌর শহরের ইমামবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারুল হক। এক ঘণ্টা পর মসুর ডাল কিনে ফেরার সময় লোকমুখে জানতে পারেন পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে। এজন্য তিনি আরও কিছু পেঁয়াজ কেনার চিন্তা করেন। কিছুক্ষণ আগে যে দোকান থেকে পেঁয়াজ কিনেছিলেন এক ঘণ্টা পর সেখানে গিয়ে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ৪৫ টাকা কেজির রসুন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে।

বিক্রেতা বললেন, ‘আজকে যে পরিমাণ পেঁয়াজ বিক্রি করেছি গত কয়েকটি ঈদেও এই পরিমাণ পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারিনি। নিয়ে নেন ভাই, দাম আরও বাড়ব।’

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার কারণে থমকে আছে বিশ্ব। গোটা বিশ্বে এখন অচলাবস্থা বিরাজ করছে। সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

করোনার কারণে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়তে পারেন এমন ভয় থেকে মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করতে বাজারে ভিড় করছেন। আর এই সুযোগে হু হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজ-রসুনের দাম।

বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় বাজারঘুরে দেখা যায়, অন্য সময়ের চেয়ে বাজারে পেঁয়াজের বিক্রেতা অনেক কম। অন্যদিকে ক্রেতারা সংখ্যায় অনেক বেশি।

শাহ আলম নামে এক পেঁয়াজ বিক্রেতার কাছে পেঁয়াজের দাম জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন আর তার কাছে পেঁয়াজ নেই। রাত আটটার মধ্যে সমস্ত পেঁয়াজ বিক্রি হয়ে গেছে। সকালে বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ৩৫ টাকা আর বিকালে থেকে সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। সন্ধ্যার পর থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।

পেঁয়াজ কিনতে আসা তানজিলা নামে এক ক্রেতা জানান, দাম আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় সন্ধ্যার আগ মূহুর্তে পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন তিনি। তিন কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন ১৬৫ টাকা দিয়ে। ২০ মিনিট পর আরও দুই কেজি পেঁয়াজ কেনার চিন্তা করে দোকানে গিয়ে দেখেন ৫৫টাকা কেজির পেঁয়াজ এক লাফে ৭৫ টাকা হয়ে গেছে। পরে তিনি আর পেঁয়াজ না কিনেই বাড়ি ফেরেন।

এক ঘণ্টার ব্যবধানে দাম এতটা বাড়ার কারণ জানতে চাইলে গফরগাঁও বাজারের পাইকারি এক বিক্রেতা বলেন, ‘দুপুর থেকে সন্ধ্যার পূর্বেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৪০ টাকায়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর থেকে তিনি ৯০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়ায় দাম বেড়ে গেছে।