করোনা : মণিরামপুরে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার

যশোরের মণিরামপুরে হঠাৎ করেই নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। করোনা ভাইরাসকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে চাল, আলু, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিকভাবে।

কোন কারণ ছাড়াই কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ। ফলে ভোগান্তি বেড়েছে নিন্ম ও মধ্যম আয়ের মানুষের।

গত এক সপ্তাহে চালের দাম বস্তা প্রতি বেড়েছে ৪০০-৫০০ টাকা। রোববার (২২ মার্চ) সরেজমিন মণিরামপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮ টাকা। চেকন ব্রি-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা কেজি। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৬-৩৭ টাকা এবং মিনিকেট চাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা, যা আগে ছিল ৪০-৪২ টাকা। দেশি পেয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫-৩০ টাকা। রসুন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। আর আলুতে কেজিপ্রতি চার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা। একইসাথে মুদি দোকানিদের প্রতিটি পণ্য আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মণিরামপুর চাল বাজারের খুচরা বিক্রেতা মফিজুর রহমান বলেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় চাল সরবরাহের সংকট রয়েছে। বড় মোকামগুলোতো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চাল মজুত করা হচ্ছে। করোনার জন্য ইন্ডিয়ান এলসি চাল বাজারে আসছে না। এছাড়া হঠাৎ করে লোকজন বেশি পরিমান চাল কিনছেন। এসব কারণে চালের দাম বেড়েছে। আমরা দাম বাড়াচ্ছি না। যেমন কিনছি, তেমন বিক্রি করছি। নতুন ধান না ওঠা পর্যন্ত চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা এই ব্যবসায়ীর।

কাঁচা বাজারের পাইকারী বিক্রেতা আকতার হোসেন বলেন, শনিবারের তুলনায় আজকে (রোববার) রসুন ও পেয়াজের দাম কেজিতে দশ টাকা কমেছে। আজ পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে, ৪০-৪৫ টাকা কেজি এবং রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৯০ টাকা।

এদিকে বাজার দর নিয়ন্ত্রনে রাখতে শনিবার (২১মার্চ) মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বাজার পরিদর্শন করেছেন। দ্রব্যমূল্য স্থির রাখতে এবং প্রতিষ্ঠানে দ্রব্যমূল্যের তালিকা টানানোর জন্য ব্যবসায়ীদের তিনি পরামর্শ দিলেও তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। রোববার (২২মার্চ) সরেজমিন বাজার ঘুরে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দ্রব্যমূল্যের তালিকা ঝুলতে দেখা যায়নি।

বাজারের বড় মুদি ব্যবসায়ী প্রতাপকুন্ডু বলেন, করোনার জন্য চাহিদার তুলনায় বাজারে দ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে। দ্রব্যমূল্য টানানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, তালিকা প্রস্তুত করেছি। আজকে টানিয়ে দেব।

জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, শনিবার বাজার পরিদর্শন করে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি। কোনভাবে যেন জিনিসপত্রের দাম না বাড়ে সেজন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতি দোকানিকে দ্রব্যমূল্যের তালিকা টানিয়ে নিত্য আপডেট করতে বলা হয়েছে। আবারও বাজার পরিদর্শনে গেলে যদি কোন দোকানে দ্রব্যমূল্যের তালিকা ঝুলানো পাওয়া না যায় তাহলে সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।