ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে একটি ‘পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি’তে যেতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিয় সিবিহা। শনিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই যুদ্ধবিরতি সোমবার থেকে শুরু হবে।
এদিন সন্ধ্যায় সিনহুয়া ও রয়টার্স সূত্রে এ তথ্য তুলে ধরেছে ইরানী বার্তা সংস্থা মেহের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে সিবিহা উল্লেখ করেন, ‘coalition of the willing’ নামে পরিচিত একটি ইউরোপীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই বিবৃতি এসেছে। জোটটির নেতৃত্বে রয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স, যারা শুরু থেকেই ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
সিবিহা এ সময় জোর দিয়ে বলেন, ‘একটি টেকসই যুদ্ধবিরতি শান্তি আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে’।
এর আগে শনিবার সকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার-এর সঙ্গে বৈঠক করেন।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচ নেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ‘ফলপ্রসূ ফোনালাপেও’ অংশ নেন। যেখানে শান্তি প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্য আলোচনা নিয়ে কথোপকথন হয়।
এদিকে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার অগ্রগতির বিষয়টি এমন এক সময়ে সামনে এলো, যখন ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে ব্যাপক সামরিক উত্তেজনার পর শনিবার বিকালে একটি ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গৃহীত হয়। তিনি ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এ ঘোষণা দেন।
এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে, উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা ১২ মে থেকে আলোচনা শুরু করবেন বলেও জানা গেছে।
দক্ষিণ এশিয়া ও ইউরোপে শান্তির বাতাস বইতে শুরু করলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এখনো দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে দখলদার ইসরাইলের অব্যাহত সামরিক আগ্রাসনে এ পর্যন্ত অন্তত ৫২,৮১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১১৯,৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন নিহত ও ১২৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
তাদেরকে মৃত ঘোষণা করে গাজার তথ্য অফিস জানিয়েছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬২ হাজারের বেশি।