মুসলিমদের লাশও পুড়িয়ে ফেলছে শ্রীলঙ্কা, বিচার চায় স্বজনরা

করোনাভাইরাসে মারা না গেলেও সংখ্যালঘু মুসলিমদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে বাধ্য করছে শ্রীলঙ্কা। এই অভিযোগ এনে ন্যায়বিচারের দাবি করেছেন দেশটির স্বজনহারা মুসলিমরা। যদিও করোনায় মৃতদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা বা মাটিতে সমাধিস্থ করা যাবে বলে নির্দেশনা রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)। সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনের এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, বায়োলজিক্যাল ঝুঁকির অজুহাতে নতুন এই নির্দেশনার গেজেট গত ১১ প্রকাশ করে শ্রীলঙ্কা সরকার। ফলে মুসলিমদের মরদেহও পুড়িয়ে ফেলছে দেশটি। এতে ওই দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর জুবাইর ফাতিমা রিনোসার শোকগ্রস্ত পরিবার ন্যায়বিচার এবং ব্যাখ্যা দাবি করেছেন; ৪৪ বছর বয়সী এই নারীর শবদাহ সম্পন্ন হওয়ার দু’দিন পর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায়। রিনোসার চার সন্তানের একজন মোহাম্মদ সাজিদ বলেছেন, দাফনের ইসলামিক ঐতিহ্য উপেক্ষা করে সব করোনা রোগীর মরদেহ পোড়ানোর বিষয়ে শ্রীলঙ্কার সরকারের বিতর্কিত বিধান অনুযায়ী তার মায়ের শবদাহ সম্পন্ন হয় গত ৫ মে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত সাতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাদের মধ্যে তিনজন মুসলমানও রয়েছে। তবে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রচণ্ড বিরোধিতা সত্ত্বেও তাদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়।

ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী, কোনো মুসলিম মারা গেলে তাকে গোসল ও জানাজা শেষে কবর দিতে হবে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) বলেছে, করোনায় মৃতদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা বা মাটিতে সমাধিস্থ করা যাবে।

তবে ডব্লিউএইচও’র এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এককভাবে মুসলমানদের মরদেহও পুড়িয়ে ফেলছে শ্রীলঙ্কা সরকার। দেশটিতে এ পর্যন্ত দুইশোর অধিক করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা গেছে। এই অবস্থায় দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার।