করোনার কালে ভালো খবর পাওয়া গেছে নিউজিল্যান্ড থেকে। দেশটিতে এ মুহূর্তে অ্যাক্টিভ করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ২১ বলে গতকাল বুধবার জানায় প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের প্রশাসন। তার চেয়েও বড় কথা, নিউজিল্যান্ডের কোনো হাসপাতালেই আর একজনও কোভিড-১৯ রোগী নেই বলে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় মৃত্যুর খবর নেই।
নিউজিল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত ২১ জনের চিকিৎসা চলছে বাড়িতেই। প্রায় তিন মাসের কঠিন লড়াই শেষে এ মাইলফলক ছোঁয়ার পিছনে কড়া লকডাউন এবং সরকারের সদিচ্ছাকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন দেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার চিন্তা বেড়েই চলেছে। টানা প্রায় তিন সপ্তাহ সংক্রমণহীন থাকার পরে গত শুক্রবার থেকে আবারও করোনায় আক্রান্তের খবর মিলছে জাপানের বন্দর নগরী কিতাকিউশু থেকে। প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দার ওই শহরে কি তাহলে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ? তেমনটাই আশঙ্কা শহরের মেয়রের। করোনার সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে ধরে নিয়েই গত ১৪ মে গোটা দেশ থেকেই জরুরি অবস্থা তুলে নেয় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের প্রশাসন। কিন্তু ছন্দে ফেরার আগেই ধাক্কা। লকডাউন যথাযথ না মানার জন্যই এ হাল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
অন্যদিকে নাইটক্লাব থেকে নতুন করে সংক্রমণের খবর ভাবাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়াকে। গতকাল দেশটিতে করোনাভাইরাস মিলেছে ৪০ জনের শরীরে, যা গত এপ্রিল থেকে হিসাব করলে এক দিনে রেকর্ড সংক্রমণ। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৭ জনেরই স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ হয়েছে। গত তিন-চার দিনে নাইটক্লাব থেকেই ২৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্য দিকে ব্রাজিল, পেরুর মতো দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশসহ বিশ্বের একটি বড় অংশ করোনা ঝড়ের প্রথম ধাক্কাতেই নাজেহাল। বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত এখন প্রায় ৬০ লাখ। মৃত প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার। সংক্রমণ ও লাখ পেরোনো মৃত্যুর হিসাবে তালিকার শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া করোনাযুদ্ধে শামিল হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬২ হাজার চিকিৎসক-সেবিকা এ কয়েক মাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় গতকাল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার সমীক্ষা বলছে, গত বছরের তুলনায় দেশটিতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১০ শতাংশ বেশি। এদিকে, করোনায় দৈনিক মৃত্যুর হিসাবে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে ব্রাজিল। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ। ব্রাজিলে করোনার পরীক্ষা কম হচ্ছে, এ অভিযোগ তুলে সাও পাওলোর একটির সংস্থার দাবি, বাস্তবে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত সরকারি হিসাবের ১৫ গুণ বেশি।
এ ছাড়া করোনার সংক্রমণ বাড়ছে পেরু ও মেক্সিকোতেও। গতকালের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় পেরুতে প্রায় ছয় হাজার নতুন সংক্রমণের খবর মিলেছে।
এদিকে, করোনার জেরে প্রায় ধসে পড়া অর্থনীতিকে সামাল দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৭৫ হাজার কোটি ইউরোর পুনর্গঠন প্যাকেজের প্রস্তাব দিয়েছে ইইউর অর্থ-বিষয়ক কমিশন। এ সাহায্য পেতে কোন দেশকে কী শর্তপূরণ করতে হবে, তা নিয়ে এখনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ইইউভুক্ত ২৭টি দেশ।