বাঘারপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় প্রাইভেট চালক খুন, যুবলীগ নেতা আটক

যশোরের বাঘারপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে রিপন হোসেন (৩০) নামে এক প্রাইভেট কারচালক খুন হয়েছেন। পুলিশ অভিযুক্ত বরকতকে আটক করেছে। তার বাড়ি যশোর শহরের বারান্দিপাড়ায়। আটক বরকত যশোর শহর ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী ফিঙে লিটনের ক্যাডার। তার নামে হত্যাসহ যশোর কোতয়ালী থানায় ১০টির অধিক মামলা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর ১টার দিকে বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে প্রাইভেটকারচালক রিপন, বরকত নামে এক যুবক ও তার স্ত্রী সাথে গাড়ি ভাড়া নিয়ে কথা বলছিলেন। ওই সময় ভাড়া নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বরকত তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে রিপনের বুকের বাম পাশে আঘাত করে। ঠেকাতে যেয়ে সেখানকার ওষুধ ব্যবসায়ী হিরুও ছুরিকাহত হন।

আহতদেরকে প্রথমে বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বেলা ২টার দিকে গুরুতর অবস্থায় রিপনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার এনাম উদ্দিন জানান, ওই যুবককে হাসপাতালের আনার আগেই তিনি মারা যান।

আহত ওষুধ ব্যবসায়ী হিরু আহমেদ বলেন, ‘আমার ফার্মেসির সামান্য দূরে একটি মোটরসাইকেলে বরকত ও ভ্যানে একটি মেয়ে বসে কথা বলছিল। পরে দেখি, স্ট্যান্ডের ড্রাইভার হাসিবুল ও বরকত কী নিয়ে যেন আলাপ করছে। হঠাৎ তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে বরকত। পরে স্ট্যান্ডের অন্য ড্রাইভারদের সাথে রিপনও এগিয়ে যায়। তারা কি কারণে হাসিবুলকে মারধর করছে জানতে চাইলে বরকত ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরি বের করে। সেই সময় আমিও দোকান থেকে বের হয়ে তাদের ঠেকাতে যায়। ভীড়ের মধ্যে বরকত আমার বাম হাতে ছুরিকাঘাত করে, পাশে ফিরে দেখি রক্তের মধ্যে কাতরাচ্ছে রিপন। উত্তেজিত ড্রাইভাররা বরকতকে ধরে বেদম মারপিট করে। পুলিশ এসে তাকেসহ স্থানীয় দু’যুবককে ধরে নিয়ে যায়।

এদিকে, রিপনের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছুলে স্থানীয় লোকজন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। স্থানীয়রা রিপনের খুনির শাস্তি ও নিরীহ দু’যুবককে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে।

জানতে চাইলে বাঘারপাড়া থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, কী কারণে রিপনকে ছুরিকাঘাত করা হয়-তা এখনও জানা যায়নি। তবে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবক বরকতকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। ঘাতক বরকত যশোর শহরের মোল্যাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার নামে কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। নিহত রিপন যশোরের বাঘারপাড়া পৌরসভার মহিরন এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে।

অভিযোগ রয়েছে বরকত উল্লাহ খান মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। যশোর শহরের মনিহার এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ফিঙ্গে লিটন ও তার ভাই ডিম রিপনের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে বরকতের বিরুদ্ধে।