করোনা চিকিৎসায় সরকারের কাছে বিএনপির ১০ প্রস্তাব

খুলনায় করোনা রোগী শনাক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া অব্যাহত থাকলে এটি করোনা শহরে পরিণত হবে। এ অবস্থায় করোনা রোগীদের কার্যকর চিকিৎসায় সরকারকে ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে খুলনা মহানগর বিএনপি।

মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার মধ্যদিয়ে এ সুপারিশ পেশ করেছে বিএনপি।

প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে, অল্প সময়ে অধিক পরীক্ষার জন্য আরও কমপক্ষে দুটি পিসিআর মেশিন ও ল্যাব স্থাপন এবং একই সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব চালু, আরও একাধিক হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা, পিসিআর-এ পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট সরবরাহ, হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত দেয়ার ব্যবস্থা করা, ফলোআপ টেস্ট পুনরায় চালু করা, পর্যাপ্ত আইসিইউ স্থাপন করা, করোনা হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা দূর করা, জেলা করোনা ম্যানেজমেন্ট কমিটি সমন্বয়হীনতা দূর করা, গরীব মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- খুলনা মহানগর বিএনপি দেশে করোনাভাইরাসে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর খুলনা শহরে ২৫ হাজার নিম্ন আয়ের মানুষকে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝেও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

খুলনা শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং চিকিৎসাসেবা অপ্রতুল হওয়ায় খুলনা মহানগর বিএনপির ‘কল সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবিক চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে। করোনা আক্রান্ত রোগী ও তার পরিবারকে ডাক্তারি পরামর্শ, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা, প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ সরবরাহ, অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা প্রদান এ কর্মসূচির মধ্যেই থাকছে। একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের দাফন ও সৎকারের ব্যাপারে প্রস্তুতির প্রক্রিয়া চলছে।

আরও বলা হয়েছে, খুলনা শহরে দ্রুত সংক্রমণের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা খুবই ভঙ্গুর। পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় ঘোষিত রুগীর সংখ্যা আড়াই হাজার। উপসর্গ নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষার অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল একটি, বেড ৮৫টি, ৯৫ শতাংশ রোগী বাড়িতে অবস্থান করে নিজেদের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছে। জটিল রুগীর জন্য মাত্র ১০টি আইসিইউ। হাসপাতালে কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে না। পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা রিপোর্ট পেতে ৭-১০ দিন সময় লাগছে। কিটের অভাবে পরীক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরীক্ষার অপেক্ষায় ১৫/১৬শ’ রোগী। ফলোআপ টেস্ট বন্ধ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। করোনা হাসপাতাল (খুলনা ডায়াবেটিকস হাসপাতাল)-এর অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ।

এ সব বিবেচনায় খুলনা মহানগর বিএনপি খুলনা করোনা চিকিৎসার জন্য দ্রুত কার্যকারী চিকিৎসার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে দলটি।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, স ম আবদুর রহমান, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, সিরাজুল হক নান্নু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দিপু, অ্যাড. গোলাম মওলা প্রমুখ।

স্মারকলিপির একটি অনুলিপি জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদকেও দেয়া হয়।