বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দুর্নীতি-অনিয়ম-চুরি-বাটপারি যেভাবে নির্বিঘ্ন আর অবাধ হয়েছে, আওয়ামী শাসন ব্যতিরেকে পরিস্থিতি কখনোই এমন ছিল না। সাহেদরাই বর্তমান আওয়ামী শাসনের নমুনা। করোনঘাতে মানুষ চিকিৎসাবঞ্চিত। প্রতিদিন মারা যাচ্ছে মানুষ। এই দুর্বিষহ সংকটের মধ্যেও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার নামে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি দলের লোকেরা।
আজ শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মোহাম্মদ সাহেদের দৌরাত্ম্যের পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাহেদ চক্রের দৌরাত্ম্য শুধু নগদ অর্থ কেলেঙ্কারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এরা মানুষের জীবন নিয়েই ব্যবসা শুরু করে দিয়েছিল। করোনা পরীক্ষার নকল সনদ দিয়েছে। তাদের এই ব্যবসার বলি হচ্ছে জনগণ।
রিজভী বলেন, গত এক দশকের বেশি একটানা ক্ষমতায় থেকেও নিশিরাতের এই সরকারটির নিজেদের সাফল্যের কিছু নেই বলেই এখনো তাদের অতীতের কাসুন্দি ঘেঁটে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইতে হয়। একটানা এক যুগের বেশি ক্ষমতায় থাকার পর একটি সরকারের জন্য বর্তমান ব্যর্থতা ও অধঃপতনের এমন করুণ পরিণতি যে কতটা লজ্জার, সেই বোধ এই সরকারের আছে বলেও কেউ মনে করে না। সুতরাং দেশে কারা ডাকাত, কারা ধোঁকাবাজ, কারা দুর্নীতিবাজ, কারা দুর্নীতিতে লিপ্ত, কোন সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজদের উত্থান হয়েছে, এটা দেশের মানুষ জানে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিজেই আক্ষেপ করে বলেছিলেন, তিনি পেয়েছেন ‘চোরের খনি’। এক দশকের বেশি সময় ধরে সেই ‘চোরের খনি’ এখন ‘ডাকাতের খনি’তে রূপান্তরিত হয়েছে। এটাই হলো আওয়ামী লীগ সরকারের সুমহান কীর্তি।
দেশের বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরে রিজভী বলেন, দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি। ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের শত শত কিলোমিটার সড়ক বিপর্যস্ত হয়ে কয়েক শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফরিদপুরসহ মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কিন্তু সরকার সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের অভিঘাতে বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে ধেয়ে আসা বন্যার কবলে পড়ে জনজীবনে এখন চরম ভোগান্তি। অবিরাম বর্ষণে মানুষের বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় গৃহপালিত গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মানুষ।
বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষদের বাঁচাতে দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান বিএনপি মহাসচিব।