বাসর ঘরে গৃহবধুকে মারপিট : স্বামী-শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে চার্জশিট

jessore map

বাসর ঘরে স্বামী স্ত্রীর কাছে বড় স্মৃতিমধুর বড়ই রমঞ্চকর। তবে কারো কারো জীবনে তার ব্যতিক্রমও হয়। যশোর শহরের বাড়ান্দীপাড়ার পিংকি তার দৃষ্টান্ত উদহারণ। বিয়ের পর বাসর ঘর জুটেছে শুধু নির্যাতন। খেতেও দেয়া হয়নি তাকে। বাসর ঘরে স্বামীর প্রথম কথাটাই হয়েছিল স্বামী বিদেশ থেকে এসেছে বিয়ে করতে। তাকে ফিরে যেতে হবে। আর গ্রীনকার্ডের জন্য তাকে টাকা দিতে হবে। অন্যথায় সংসার করা চলবে না।

তিনি আরো জানান, টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাই বাসর ঘরে তার কপালে স্বামীর ভালোবাসা জোটেনি। স্বামীর হাতে বেধরক মারপিটের শিকার হয়ে তাকে জ্ঞান হারা হতে হয়েছে। তাই পিংকি এখন ঘরবাধার স্বপ্ন আর দেখেনা। অশ্রুভরা চোখে শুক্রবার বিকেলে এমনটিই জানালেন হতভাগা পিংকি।

যশোরে স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পিংকির দায়ের করা মামলায় পুলিশ তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে। চার্জশিটে স্বামী মণিরামপুর উপজেলার গাংগুলিয়া গ্রামের প্রবাসী আরিফুল ইসলাম ও তার পিতা আরিজুল ইসলাম ও মা তাসলিমা খাতুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এসআই কাইয়ুম মুন্সী আদালতে এ চার্জশিট দেন।

চার্জশিটে তিনি উল্লেখ করেন, আরিফুল দুবাই থাকতেন। দেশে এসে গত বছরের ৪ অক্টোবর সে শহরের পূর্ববারান্দীপাড়ার আকবর আলরি মেয়ে পিংকি খাতুনকে বিয়ে করে। এরপর যৌতুকের দাবিতে আরিফুল শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন শুরু করে। তারদাবী ছিলো বিদেশে গ্রীন কার্ডের জন্য পাঁচ লাখ টাকা আদায়। এরমধ্যে সে মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা আদায়ও করেন। এরপর বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় ফের বিদেশ পারী দেন। এরপর তার পিতা মাতাকে দিয়ে বাকি তিন লাখ টাকার জন্য পিংকির উপর ফের নির্যাতন শুরু করে। বাকী তিনলাখ টাকা না দেয়ার দুইমাস না পুরতেই গত ২ ডিসেম্বর পিংকিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় আরিফুলের পিতা মাতা।

এদিকে, এ ঘটনায় পিংকি খাতুন বাদী হয়ে গত ২৩ মার্চ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম বিষয়টি আমলে নিয়ে কোতোয়ালী থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহনের নির্দেশ দেন। পরে মামলাটি তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার আদালতে চার্জশিট জমাদেন তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য আদেশ দেন।