খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত ঝিনাইদহের গাছীরা

শীতের আগমনের সাথে সাথে ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার গাছীরা খেজুর গাছ তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতকালে বাঙালির রসের হরেক রকের পিঠাপুলির জুড়ি নেই। গাছীরা ভোর হওয়ার সাথে সাথে দড়ি, দা, ঠুঙ্গি সহ গাছ তোলার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে গাছ তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

সদর উপজেলার বেড়গোপিনাথপুর গ্রামের গাছী মো. ফজলুর রহমান জানান, তিনি কুড়ি বছর ধরে গাছ তোলেন। খেজুর গাছ তোলার প্রথম দিকে ডগা পরিস্কার করতে হয়। খেজুর গাছের মাথার দিকে ১০/১২টি ডগা রাখতে হয়। তারপর ১০/১৫ দিনের মধ্যে চাচ দিতে হয়। শুকানোর পর নলি বসাতে হয়। কিছুদিনের মধ্যে শুকিয়ে গেলে তারপর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হয়। খেজুর তোলার দা/মুড়ি দা তৈরী করতে সহস্রাধিক টাকা লাগে। ধার নষ্ট হলেই পোড়াতে প্রয়োজন হয় দেড়শ টাকা। এলাকায় বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। আর খেজুর তোলায় নতুন গাছীরা আসতে চায় না। ফলে অনেক সময় গাছীর অভাবেই অনেক গাছ তোলা ও রস সংগ্রহ বন্ধ থাকে।

এদিকে শীতের আগমনের সাথে সাথে পালদের রসের হাড়ি তৈরীর ব্যস্ততাও বেড়ে গেছে। যতদিন শীত থাকে ততদিন গাছীদের ব্যস্ততা থাকে। ঝিনাইদহ সদর থানার কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পরিতোষ কুমার বিশ্বাস জানান, গ্রাম বাংলায় অবারিতভাবে রাস্তার পাশে, জমির আইলে, পতিত জমিতে খেজুরগাছ দেখা যেত, কালক্রমে ধ্বংস হয়ে গেছে। কতিপয় ব্যক্তি অবাধে নিধন করছে এই খেজুর গাছ। ফলে উজাড় হচ্ছে বণভূমি। ফলে বাঙালি রসনাবিলাসের আস্বাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু আজও বাঙালি চিরাচরিত খেজুরের রসের স্বাদ ভুলতে পারে না। বাঙালির সমাজে শীতের পিঠাপুলির ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে, অতি দ্রুত সরকার ও জনসাধারণের সার্বিক সহযোগীতায় খেজুরগাছ সংরক্ষণে নজর দিতে হবে।