যশোরের জামানত খোয়ানো ৮২ মিলারের দেন-দরবার

গত বোরো মৌসুমে সরকারের সাথে চুক্তি করার পরও চাল না দেয়ায় যশোরের ৮২ মিল মালিকের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একই সাথে তাদের কাছ থেকে আগামি দুই বছর চাল কিনবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে জামানত বাজেয়াপ্ত মিলাররা তাদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে দেন দরবার করছে।

জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া ৮২ জন মিলার এখন সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সুপারিশ করার জন্য। তবে কোন সুপারিশ এখনো হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মুখ খোলেননি। নেতারা অবশ্য তাদের কাছে নিতে আসা মিলারদের সুপারিশ সম্পর্কে মুখ খুলেছেন। তারা বলছেন মিলাররা বার বার বলছে আগামীতে তাদের আর এমন ভুল হবেনা। এ বিষয়ে প্রয়োজনে তারা লিখিত অঙ্গীকার করতেও রাজী।

জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া মিলগুলোর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলায় রয়েছে ৯টি, অভয়নগরে ১টি, কেশবপুরে ২৪টি, ঝিকরগাছায় ৯টি, শার্শায় ১৪টি, বাঘারপাড়ায় ৭টি এবং চৌগাছা উপজেলায় রয়েছে ১৮টি মিল।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যশোরে গেল বোরো মৌসুমে ২৭ হাজার ৩১২ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করবে বলে চুক্তি করেন ৩৬১ জন রাইসমিল মালিক। অথচ ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে সরকারকে দিয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন। এসব রাইচমিল মালিকের মধ্যে ৮১ জন মিলার একেবারেই চাল দেননি। আংশিক চাল দিয়েছেন ১১১ জন। আর সম্পূর্ণ চাল দিয়েছেন ১৪৫ জন মিল মালিক। এটি হাসকিং মিলের ক্ষেত্রে। ২৪ জন অটো রাইস মিল মালিকের মধ্যে একজন একেবারেই চাল দেননি। ১৩ জন মিলার আংশিক দিয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী সম্পূর্ণ চাল দিয়েছেন ১০ জন অটো রাইস মিল মালিক।

বোরো মৌসুমে যশোরে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৬ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। চাল উৎপাদন হয়েছিল ছয় লাখ ৮০ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন। ২৭ হাজার ৩১২ মেট্রিক টনের জায়গায় খাদ্য বিভাগের সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন চাল।

যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, ৮২ জন মিল মালিকের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একই সাথে তাদের কাছ থেকে চলতি আমন মৌসুম ও আগামি বছর কোনো চাল কেনা হবে না। চলতি আমন মৌসুমে সরকার যশোর থেকে ৫ হাজার ১ মেট্রিক টন ধান কিনবে ২৬ টাকা প্রতি কেজি দরে। শুধুমাত্র সদর উপজেলার কৃষকদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।