সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সরিয়ে বোরো চাষের চেষ্টা হরিদাসকাঠি বিলে

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার হরিদাসকাঠি সম্বোলডাঙা বিলে দেড় হাজার বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। জলাবদ্ধতায় গত মৌসুমে আমন চাষ করতে পারেননি এই বিলের কৃষকরা। বোরো মৌসুম আসন্ন। জলাবদ্ধতা নিরসনে এখনো সরকারিভাবে কোন উদ্যোগও নেয়া হয়নি। তাই নিরুপায় কৃষক নিজেদের খরচে পানি অপসারণের কাজ শুরু করেছেন। ১২টি ডিজেল ইঞ্জিন ভাড়ায় এনে কৃষকরা গত ১৭ দিন ধরে পানি অপসারণের কাজ করছেন।

হাজরাইল গ্রামে কৃষকদের পানি সেচে মুক্তেশ্বরী নদীতে ফেলতে দেখা গেছে। ভোমরদহ গ্রামের ইদ্রিস গাজী ডিজেল ইঞ্জিনগুলো ভাড়া এনে ৫০জন শ্রমিক লাগিয়ে বিল থেকে পানি সেচের মাধ্যমে পানি অপসারণের কাজ করছেন। শ্রমিকরা সবাই সম্বোলডাঙা বিলের কৃষক। তারা ভোমরদহা, সুবলকাঠি, শ্রীপুর ও হাজরাইল চার গ্রামের বাসিন্দা।

জমির পানি সরাতে কৃষককে বিঘাপ্রতি গুনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। গত চার বছর ধরে এভাবে নিজেদের খরচে জমির পানি সরিয়ে বোরো চাষ করতে হচ্ছে কৃষকদের। বিরামহীন রাতদিন চলছে ডিজেল ইঞ্জিনগুলো।

কৃষকরা জানায়, মূলত বিলের পানি ঢাকুরিয়া খাল হয়ে পাঁচবাড়িয়া স্লুইসগেট দিয়ে মুক্তেশ্বরী নদীতে পড়ে। সেই পানি ভবদহ হয়ে নেমে যেত। কিন্তু ভবদহে পলি জমায় সেখান দিয়ে পানি সরছে না। সে কারণে মুক্তেশ্বরী নদী স্রোতহীন। ফলে সম্বোলডাঙা বিলের পানি সরতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শীত মৌসুম আসলেও এখনো বিলে ২ থেকে জায়গা বিশেষ ৫ ফুট গভীরতায় পানি জমে আছে।

ভোমরদহ গ্রামের কৃষক অনিমেশ সরকার বলেন, বিলে আমার তিন বিঘা জমি আছে। আমন আবাদ করতে পারিনি। বোরো ধান আবাদ করার ইচ্ছে আছে।

উদ্যোক্তা ইদ্রিস আলী বলেন, বিলের পানি সরাতে জমির মালিকরা সবাই উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছি। গত চার বছর ধরে পানি আটকে থাকায় আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে পানি সরাচ্ছি। এইবারসহ আমি দুইবার দায়িত্ব নিয়েছি।

তিনি বলেন, কেশবপুর থেকে দৈনিক ৬০০ টাকা চুক্তিতে প্রতিটি মেশিন ভাড়া করা। পুরো পানি সরাতে দেড়মাস লাগবে। সবাই টাকা দিতে পারে না। ১৬/১৮ লাখ টাকা খরচ হবে। আমার নিজের ২০ বিঘা জমি রয়েছে। লাভের আশা করিনে। ফসল উৎপাদনে জন স্বার্থে একাজ হাতে নিয়েছি।

হাজরাইল গ্রামের মেম্বর আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা বিঘাপ্রতি এক হাজার টাকা করে দিচ্ছি। বিলের সব মাছ ধরে ওরা বেচে নেবে। প্রায় সাত-আট লাখ টাকার মাছ বেঁচতে পারবে। ওদের খুব একটা লোকসান হবে না।

মণিরামপুর উপজেলা বিএডিসি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আকতার হোসেন বলেন, বিল কপালিয়ার পানি সরাতে সরকারি খরচে কাজ চলছে। সম্বোলডাঙা বিলের বিষয়টি আমার জানা নেই।