আম্ফানে ইসরাফিলের ঘর গেছে : পরিবার নিয়ে রাস্তার পাশে খুপড়িতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে

চারপাশ ছেড়া পুরনো পলিথিন দিয়ে মুড়ানো। বেড়া বলতে এটুকুই। উপরে টালির ছাউনি। ছোট্ট একটি খুপড়ি ঘর। এর ভেতরে ততোধিক ছোট একটি চৌকি। তার পাশে হাড়ি পাতিলসহ যৎসামান্য কিছু জিনিসপত্র।আসবাবপত্র বলতে তেমন কিছুই নেই। খুপড়ির ভেতরে সোজা হয়ে দাঁড়ানোটা বেজায় কষ্টকর। সোজা হয়ে দাঁড়ানো না গেলেও দুই শিশু সন্তান, স্ত্রীসহ এই খুপড়িতে বসবাস করছেন ইসরাফিল আলী খাঁ।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের দিগদানা গ্রামের নগরপাড়ার আব্দুল কুদ্দুস খাঁর ছেলে ইসরাফিল আলী খাঁর বাড়ির চিত্র এই রকমই।

রোদ, বৃষ্টি, ঝড় ও শীতে এ খুপড়িতে তাঁদের ইতোমধ্যে পার হয়েছে আটটি মাস। তাদের এই অসহায় অবস্থা এতদিনেও কারোর নজরে আসেনি। কেউ দেখেননি অথবা দেখেও না দেখার ভান করেছেন।

গত ২১ মে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আম্ফানে তাঁর বসতঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে এই খুপড়িটি করেন তিনি। বসবাসযোগ্য ঘর বানানো তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তার এই দুরবস্থা কারো নজরে আসেনি।

ইসরাফিল আলী খাঁর স্ত্রী পাপিয়া খাতুন জানান, সংসারে তাঁদের দুইটি সন্তান রয়েছে।পাঁচ মাস বয়সের ছোট ছেলেটির জন্য ৫ দিনে ৫৫০ টাকার দুধ লাগে। স্বামী বাইসাইকেল মিস্ত্রির কাজ করে। তাই ছেলের দুধের টাকা সব সময় জোগাড় হয় না, এখন বাধ্য হয়ে সুজি খাওয়াতে হয়।

ইসরাফিল আলী খাঁ জানান, পাঁচ ভাই-বোনের পৈত্রিক সম্পদ বলতে নয শতক জমি সম্বল। তা থেকে পাওয়া আড়াই শতক জমি হচ্ছে তার শেষ সম্বল। এর উপর ছিল মাটির ঘর। যা আম্পান ঝড়ে নিশ্চিন্ন হয়ে যায়। এরপর একটি ঘর ও সন্তানের বিষয় মার্তৃত্ব ভাতার কার্ডের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার গিয়েছি। তিনি দেয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত কিছুই দেননি।

ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য গ্রামেরই সেলিম রেজা জানান, তিনি এসব পাওয়ার যোগ্য, তবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে না দিলে আমার কিছুই করার নেই।

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নিছার আলী জানান, বিষয়টি আমি দেখব। ওদেরকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া, আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ এ বিষয় যদি কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে নতুন করে ব্যবস্থা করব।