স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ফের নামছে ভ্রাম্যমাণ আদালত

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবারো স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মাস্ক না পরলে জরিমানা করবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ বিষয়ক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

দেশে গত কয়েক দিন ধরে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ দিন পর সর্বোচ্চ ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৭৭৩ জনের শরীরে, যা ৮৭ দিন পর সর্বোচ্চ। এজন্য সরকার নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত নামানোর কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত যেগুলো ছিল সেগুলো মানাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। যারা মাস্ক না পরে তাদেরকে জরিমানা করবে। নো মাস্ক-নো সার্ভিস কর্মসূচিকে আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গেস্ট কন্ট্রোল করবে।’

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যে হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমাদের হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও অক্সিজেনের কোনো স্বল্পতা নেই।’

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা বাড়ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় মানুষের ভিড় বাড়ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানও বেড়েছে। এসব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ নেই। এসব জায়গায় গেলে মনে হয়, দেশে করোনা নেই।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচল করা, নো মাস্ক নো সার্ভিস না মানা, মাত্রাতিরিক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া, মাস্ক ব্যবহার না করা করোনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। নতুন করে যুক্ত হয়েছে করোনার টিকা গ্রহণে অনীহা।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অংশ নিতে বিভিন্ন দেশ থেকে ১৭ মার্চ থেকে অতিথিরা আসতে শুরু করবেন। অতিথিদের করোনার টেস্ট করার জন্য কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অতিথিদের হোটেল থেকে নমুনা সংগ্রহেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশে যারা থাকবেন তাদেরও করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

মন্ত্রী জানান, দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। একারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত রিভিউ হতে পারে। করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।