মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের গেরিলা আক্রমণের ডাক

মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের ওপর জান্তা যতই কঠোর হচ্ছে, ততই জোরালো প্রতিরোধের পরিকল্পনা করছেন তারা। ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধের মধ্যে বিকল্প পথে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করছেন অভ্যুত্থানবিরোধীরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, খিন নামে এক আন্দোলনকারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ‘ফুলের আঘাত’ হানার আহ্বান জানিয়েছেন। সেসব বাসস্টপে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে প্রতিবাদকারীরা প্রাণ হারিয়েছিলেন সেসব বাসস্টপে নিহতদের স্মরণে শুক্রবার ফুল ছড়ানোর ডাক দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট পরিসেবা আরও সীমিত হয়ে যাওয়ার আগে এই আহ্বান সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার কথাও বলা হয়েছে।

খিন তার পোস্টে লেখেন, যত বেশি সম্ভব আপনারা গেরিলা আক্রমণ করুন। দয়া করে এসব আক্রমণে যোগ দিন। রেডিওতে কী বলা হচ্ছে শুনুন। সবাইকে ফোন দিন।

খবরে বলা হয়, অভ্যুত্থানবিরোধী সংগঠনগুলো একে অপরের সঙ্গে রেডিও তরঙ্গবার্তা শেয়ার করছে। তারা অফলাইন ইন্টারনেট রিসোর্স ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে ক্ষুদে বার্তা আদান-প্রদান করছে। মিয়ানমারে ইন্টারনেট পরিসেবা শুধুমাত্র ফিক্সড-লাইন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সীমিত করে রাখা হয়েছে।

দেশব্যাপী আন্দোলন চাঙা করা ও নিরাপত্তারক্ষীদের সহিংস দমনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ওয়ারলেস ব্রডব্যান্ড ও মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে। সামরিক সরকার এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা বা এর কারণ জানায়নি।

এদিকে, গতকাল দিনে ও রাতে মিয়ানমারের শহরগুলোর রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন গণতন্ত্রকামীরা। তাদের অনেককে ২০০৮ সালে সামরিক বাহিনীর তৈরি করা সংবিধান পোড়াতে দেখা যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গতকালকের বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালালে ১৮ বছরের এক তরুণসহ অন্তত দুই জন নিহত হন। সংবাদমাধ্যম খিট থিটর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, রাতে বিক্ষোভ চলাকালে গুলি চালানো হয়। তবে এ তথ্য যাচাই করতে পারেনি বার্তা সংস্থাটি।

গতকাল মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ছবিতে দেখা যায়— ইউনিফর্ম ও হেলমেট পরা ও রাইফেল হাতে এক দল মানুষ এক অচেতন ব্যক্তিকে লাথি মারছেন ও পেটাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অপর এক ছবিতে দেখা যায়, শত শত মানুষ অন্ধকারে মোমবাতি হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছেন। তারা এমনভাবে দাঁড়িয়েছেন যে এতে সৃষ্টি হয়েছে একটি বাক্য— আমরা কখনই আত্মসমর্পণ করবো না।