উত্তাল পদ্মায় এখনো নৌযান চলাচল বন্ধ

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব না থাকলেও ঝড়ো বাতাসের কারণে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উত্তাল রয়েছে পদ্মা। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে এখনো বন্ধ রয়েছে নৌযান চলাচল।

বিআইডব্লিউটিসির মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া) আহমদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঘাট কর্তৃপক্ষ ফেরিগুলোকে নদীর মাঝে নোঙ্গর করে রেখেছে বাংলাবাজার ঘাটে প্রায় ১০টি ফেরি নোঙ্গর করে রাখা আছে। ফেরি ঘাটে ভিড়তে দেখলেই জড়ো হন ঘাটের পন্টুনের ওপর।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মঙ্গলবার বিকাল থেকে লঞ্চ এবং বুধবার ভোর থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে। ঝড়ের প্রভাব কেটে গেলেও পরবর্তী নির্দেশনা না আসায় এখনো বন্ধ রয়েছে নৌযান চলাচল। অথচ বৃহস্পতিবারও বাংলাবাজার ফেরিঘাটে কয়েক হাজার যাত্রী পদ্মা নদী পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছেন।

ঘাট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মায় প্রবল ঢেউ রয়েছে। শিমুলিয়া প্রান্তের প্রতিটি ফেরি ঘাটই পানিতে নিমজ্জিত। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার ঢেউয়ের ধাক্কায় শিমুলিয়া ফেরিঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘাট থেকে ফেরির পন্টুন বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যার মেরামত চলছে বলে শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে।

বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবের কারণে মঙ্গলবার বিকাল থেকে নদী কিছুটা উত্তাল হয়ে উঠে। দুর্ঘটনা এড়াতে তখন লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। রাত ২টার দিকে ডাম্প ফেরি বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়াও ভোর ৬টা থেকে রোরো, কেটাইপ ও মিডিয়ামসহ সব ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।

বরিশাল থেকে আসা যাত্রী আরমান জানান, বুধবার সকাল ৮টা ঘাটে এসেছি। দুপুরে একটা ফেরিতে উঠছিলাম। পুলিশ লাঠি চার্জ করে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়েছে। ফেরির ভাড়াও দিয়েছি ২৫ টাকা। সেই ভাড়াও ফেরত দেয় নাই। শুধু ভাড়া নেয় কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে, কিন্তু ফেরি ছাড়ে নাই। রাতে বাংলাবাজার ঘাটেই ছিলাম।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাতাস থাকায় পদ্মানদী উত্তাল রয়েছে। মাঝ পদ্মায় বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা এলেই নৌযান চলাচল শুরু করবে বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।

গোপালগঞ্জের যাত্রীর সাহান আক্তার জানান, কোলের ছোট শিশু বাচ্চাকে নিয়ে ঘাটে এসেছি বুধবার রাতে ফেরি ঘাটেই ছিলাম। ফেরিও ছাড়ে না। কী ভাবে যাবে বুঝতে পারছি না। বাড়িতে ও ফেরত যেতে পারছি না।

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, লঞ্চ চলাচল এখনো বন্ধ আছে। মঙ্গলবার বিকাল থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলেও এখনো চলাচলের কোনো নির্দেশনা আসেনি।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন মিয়া জানান, বুধবার থেকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল করবে না। তবে তিনি বিকল্প হিসেবে যাত্রীদের আরিচা দৌলতদিয়া রুটে চলাচলের অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিআইডব্লিউটিসির মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া) আহমদ আলী বলেন, পদ্মায় এখনো প্রবল ঢেউ রয়েছে। এর মধ্যে ফেরিসহ নৌযান চালানো ঝুঁকি রয়েছে।