আফগান সরকারের পাশে থাকবে ভারত

আফগানিস্তান এখন মহাবিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে। মার্কিন সেনা যত সরছে ততই এগিয়ে আসছে তালেবান যোদ্ধারা। রীতিমত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশটিতে। একের পর এক শহরের দখল চলে যাচ্ছে তালেবানদের হাতে।

এই অবস্থায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৈঠকে আফগানিস্তানের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে আয়োজিত একটি আঞ্চলিক সম্মেলনে আফগান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানেই তিনি আফগানিস্তান আপরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

এর আগে ১৩ ও ১৪ জুলাই তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে আফগানিস্তান সম্পর্কিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দেন জয়শঙ্কর। সেখান থেকে তিনি তাসখন্দ সফরে যান। আর সেখানে গিয়েই আফগান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

জয়শঙ্কর বলেছেন, তালেবানদের মোকাবিলা করতে হবে উন্নয়ন দিয়ে। আফগানিস্তানের শান্তি, স্থিতিশীলতা আর উন্নয়নের জন্য ভারত সবধরনের সহযোগিতা করবে।

আশরাফ ঘানির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি তুলে ধরে এস জয়শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই অবস্থায় ভারত আফগান সরকারের পাশে থাকার সবরকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

জয়শঙ্কর আরো বলেছেন, ভারত দেড় লাখ টন গম সরবরাহ করে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে। সাংহাই কর্রোপেরেশন সংস্থার বৈঠকেও এস জয়শঙ্কর পাকিস্তান আর চীনের দিকে আঙুল তুলেছেন সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে। সেই বৈঠকে তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের জন্য অর্থায়ন অবিলম্বে বন্ধ করা জরুরি।

একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন বর্তমান অফগানিস্তানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উন্নয়ন আর জনস্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া প্রাথমিক কর্তব্য। এর আগেই জয়শঙ্কর আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হানিফ আতমারের সঙ্গে তাজিকিস্তানে সাক্ষাৎ করেছিলেন। গোটা বিশ্ব আফগানিস্তানে তালিবানদের উত্থানে যখন উদ্বিগ্ন তখন ভারত আফগান নাগরিকদের উন্নয়ন নিয়েই কথা বলেছিল।

ইতোমধ্যেই ভারত আফগানিস্তান থেকে কনসুলেট কর্মী ও কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তারপরেও দেশটির শান্তি আর উন্নয়নের জন্য কথা চালিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তানের উন্নয়নের জন্য আগেই ভারত তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই অবস্থায় ক্রমশই বাড়ছে তালেবানদের প্রভাব। গত কান্দহারের খুব কাছেই ঘাঁটি গেড়ে আবস্থান করছে তালেবানরা। আগস্ট মাসের শেষের দিকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার প্রায় সম্পন্ন হবে।

মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ছয় মাসের মধ্যেই কাবুলের বর্তমান সরকারের পতন হতে পারে বলে এক মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে। আর সত্যিই যদি তা হয়, তাহলে ২০ বছর পর তালেবানই যে আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেবে তা নিয়ে তেমন সন্দেহ আর কেউ করছে না। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।