জোর করে ক্ষমতা দখল করলে তালেবান স্বীকৃতি পাবে না!

ভারত সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বুধবার দিল্লিতে ঘোষণা করেছেন, আফগানিস্তানে তালেবান জোর করে ক্ষমতা দখল করলে কখনোই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে সঙ্গে নিয়ে এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে তারা আরও জানিয়েছেন, তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনার মধ্যে সমাধান খোঁজাই একমাত্র পথ বলে দুই দেশ বিশ্বাস করে।

এ বছরের গোড়ায় বাইডেন প্রশাসন ওয়াশিংটনে দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের এটাই ছিল প্রথম ভারত সফর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে এসে পৌঁছনোর পর তিনি বুধাবার সকালে প্রথমে বৈঠক করেন ভারতের সুশীল সমাজের বাছাই-করা জনাকয়েক প্রতিনিধির সঙ্গে।

তারপর একে দেখা করেন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সবগুলো বৈঠকেই আলোচনার একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল আঞ্চলিক নিরাপত্তা তথা আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি।

পরে বিকেলে দু’দেশের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আফগানিস্তান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন বলেন, এটা ঠিকই যে গত সপ্তাহে আমরা বেশ কয়েকটি জেলা সদরে তালেবানের অগ্রযাত্রা দেখেছি। প্রাদেশিক কয়েকটি রাজধানীও তারা কব্জা করতে চাইছে।

যে সব এলাকা তারা দখল করেছে সেখানে নির্যাতন চালানোরও খবর আসছে – যেগুলো সত্যিই বিচলিত করার মতো। পাশাপাশি আমি এটাও বলব তালেবান কিন্তু বহুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইছে, চাইছে তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক এবং তাদের নেতারা যাতে দুনিয়ায় অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারেন।

কিন্তু আফগানিস্তানে জোর করে ক্ষমতা দখল করতে গেলে বা নিজেদের লোকদের ওপর অত্যাচার করে সে লক্ষ্য পূরণ হবে না। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়ে গেলেও সে দেশে শক্তিশালী একটি দূতাবাস ও নানা উন্নয়নমূলক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে আমেরিকার জোরালো প্রভাব ও উপস্থিতি থাকবে বলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন।

তবে তার ভারতীয় কাউন্টারপার্টের কথা থেকেও স্পষ্ট হয়ে গেছে, সে দেশ থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে ভারত হতাশ – কিন্তু এখন তারা সেই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনার ওপরেই জোর দিতে চাইছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, ‘গত কুড়ি বছর ধরে যেখানে একটা শক্তিশালী মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ছিল তা তুলে নেওয়া হলে অবশ্যই তার প্রভাব পড়বে, সেটা অবধরিত।

কিন্তু এখন এটার ভালো-মন্দ বিচার করার সময় নয়, একটা নীতি গৃহীত হয়েছে এবং আমাদের সেটা মেনে নিয়েই চলতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কূটনীতিও পরিচালিত হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।