জামালপুরে করোনার প্রভাব পড়ছে পান চাষীদের উপর

জামালপুর করোনার প্রভাব পড়েছে জামালপুরের পান চাষীদের উপর। করোনার কারনে পাইকের আসতে না পারায় লোকসানে পড়েছে পান চাষীরা।

পানের বর থেকে পান তুলে বাজারে নিয়ে অর্ধেকও বিক্রি করতে পারছেন না। দীর্ঘ মেয়াদী ফসল হওয়ায় পান চাষীরা লাভবান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা, বাঁশচড়া, নরুন্দি, ইটাইল ঘোড়াধাপসহ সদর উপজেলার পূর্ব অঞ্চলে এ বছর পানের ফলন ভালো হয়েছে। করোনার প্রভাবে এই অঞ্চলের পান চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

জামালপুর সদর উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের ৫ টি ইউনিয়নের চাষীরা পান চাষ করে থাকে।একটি পানের বর তৈরি করতে তাদের খরচ হয় ৪০/ থেকে ৫০ হাজার টাকা আর পানের বর সারা বছর পরির্চযা করতে প্রতি বিঘায় এক বছরে খরচ হয় ১ লক্ষ টাকা।

বছরে আয় হয় ২লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা। এ বছর পানের ফলন ভালো হয়েছে। করোনার প্রভাবে বাজারে পান বিক্রি করতে গিয়ে পানের ক্রেতা না পাওয়ায় অর্ধেক পান অবিক্রিত থাকে যাচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে পান চাষীরা। পানের বরে অনেক পান নষ্ট হচ্ছে। সপ্তাহে দুই দিন পান তোলা হয়।

এতে দুই তিন জন শ্রমিক খাটে। প্রতি শ্রমিককে দিতে হয় ৫শ টাকা। নিজেরাও কাজ করে। এখন বাজারে তেমন পান বিক্রি হয় না। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটছে পান চাষীদের। একটি পানের বর তৈরি করলে অনেক বছর পান পাওয়া যায়। দেশে করোনার প্রভাবে পান নিয়ে বিপাকে পড়েছে পান চাষীরা। সংসারের খরচ চালানো দায় হয়ে পড়েছে পান চাষীদের।

পান চাষী মো.রাসেদুল ইসলাম জানান, পানের বর থেকে পান তুলে বাজারে নিয়ে অর্ধেকও বিক্রি করতে পারছেন না। আর পাইকার না আসায় পানের বরেই অনেক পান নষ্ট হচ্ছে।

দাম না পাওয়ায় পান তোলা শ্রমিক আর পান চাষীদের পরিশ্রমের দাম না পেয়ে হতাশায় পড়েছে তারা। গত বছর পানের মান ভেদে ১বিড়া পান বিক্রি হয়েছে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৫০থেকে ১শ টাকায়। আর ছোট পান বিক্রি ২০থেকে ৩০টাকায়।

ঘোড়াধাপ ইউনিয়নের কটার বাড়ি এলাকার পান চাষী আবুল কালাম জানান, পান বিক্রি না হওয়ায় অনেক কষ্টে দিন কাটছে তাদের।

ঘোড়াধাপ ইউনিয়নের ইদিলপুর এলাকার পান চাষী শামছুল আলম জানান, পাইকের না আসায় পান তোলে বাজারে আনলে বিক্রি করা যায় না আবার না তুললে বরেই পান পাতা পেকে লাল হয়ে যায়। তুললে সমস্যা না তুললেও সমস্যা। পান নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি।

পানের বরের শ্রমিক মো.সেকান্দার আলী জানান, পানের বরে কাজ করে সংসার চলে। পান চাষীরা বাজারে পান বিক্রি করতে পারছে না। পাইকের আসতে পারে না। তাই কাজ করতে পারছি না। গহস্থরা পান বিক্রি করে টাকা না পেলে আমাদের কাজে নিবে কিভাবে। খুব সমস্যার মধ্যে দিন যাচ্ছে।

জামালপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াছমিন জানান, পান দীর্ঘ মেয়াদী লাভজনক ফসল। করোনার কিছু প্রভাব পান চাষীদের উপর পড়েছে।

তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা পান চাষীদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে চা পানের দোকান বন্ধ থাকায় আগের চেয়ে পানের বিক্রি কমেছে। এই সমস্যা কেটে গেলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে।