বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা অপরিহার্য: মেয়র লিটন

ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি, বাংলার রাখাল রাজা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি অত্যাচার নির্যাতন, সহ্য করে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার জন্য বার বার জেল খেটেছেন সেই জাতির জনককে পাকিস্তানী বাহিনী হত্যা করে নাই।

যিনি শোষিত বঞ্চিত নিপিড়ীত বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন সার্বোভৌম বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডটি উপহার দিয়েছিল, তাকে হত্যা হতে হলো তারই সৃষ্ট এদেশীয় বিপথগামী সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে। আর সাথে সাথে আমরা বাঙালি জাতি বীরের জাতি থেকে উপাধি পেলাম বেঈমানের জাতিতে।

পৃথিবীর ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর পরিবার দেশের জন্য যে রক্ত দিয়েছে তা অন্য কোন রাষ্ট্রের নায়ক এত রক্ত দেয়নি। ১৫ আগষ্টের জাতীয় শোক দিবসে কথা বললেন প্রধান অতিথি হিসাবে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

রোববার বেলা সাড়ে ৪ টার সময় বেনাপোল সোনালি ব্যাংক চত্বরে শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ আগষ্ট জাতিয় শোক দিবস অনুষ্ঠানের দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সাবেক উলাশী ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল আলম। প্রধান অতিথি মেয়র লিটন অনুষ্টানের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ট সন্তান ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সাথে পরিবারের শাহাদত বরনকারী সকল সদস্যদের প্রতি দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের অধিকাংশ সময় বাংলাদেশের মানুষ ও তাদের কল্যানের জন্য ব্যয় করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সমগ্র বাংলাদেশকে সংঘবদ্ধ করতে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

তাই প্রত্যেক বাংলাদেশীর জন্য জাতির পিতার জীবনী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা অপরিহার্য। তিনি গরীব মেধাবীদের জন্য স্কুলে মাষ্টারদের নিয়ে সংগঠন করে বাড়ি বাড়ি যেয়ে চাল, টাকা, ধান সংগ্রহ করতেন। এগুলো বিক্রি করে মেধাবীদের বই খাতা কলম কিনে দিতেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ সংগঠক।

রোদ বৃষ্টিতে যারা ভিজে ¯ু‹লে আসতেন তাদের নিজের ছাতাটি দিয়ে দিতেন। এজন্য তাকে মাসে কয়েকটি ছাতা ক্রয় করে দিতে হতো। বঙ্গবন্ধু তার জীবনে মোট ৪৬৮২ দিন কারাভোগ করেন শুধু বাঙালি জাতির স্বাধীকার আদয়ের জন্য। এর মধ্যে মাত্র ৭ দিন তিনি বৃটিশ আমলে কারা ভোগ করেন।

জাতির জনক বার বার কারাবরন করেছে তবুও কোন অন্যায়ের সাথে আপোস করেন নাই। কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাষ্ট্রো বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু কি এমন জাদু জানে মাত্র ৯ মাসে একটি জাতিকে আলাদা ভুখন্ডে রুপান্তরিত করল। তার এক ভাষনে সেই দেশের সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি একত্রিত হয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছিল । তিনি বলেছিল আমি হিমালয় দেখিনি।

তবে বঙ্গবন্ধুকে আমি দেখিছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমান। এ ভাবে আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতাই লাভ করলাম। মেয়র লিটন বলেন, জাতির জনক যখন কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে লেখা পড়া শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রে ভর্তি হন।

তখন ওই বিশ্ব বিদ্যালয়ের নির্যাতিত নিপিড়ীত ৪র্র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের আন্দোলনে তিনি সহযোগিতা করায় বিশ্ব বিদ্যালয় তাকে বহিস্কার করে জরিমানা করেন। সে যদি জরিমানা দিয়ে দেয় তবে তার ছাত্রত্ব বাতিল হবে না। তখন তিনি জরিমানা দিতে রাজী হয়নি। তিনি বলেন কোন অন্যায়ের কাছে তিনি মাথা নত করবে না।

কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকারের আন্দোলনে তিনি শরীক হয়েছেন। তার জন্য অবৈধ ভাবে তাকে বহিস্কার করা হলো। এ ছাত্রত্ব আমার প্রয়োজন নাই। তিনি এই লাল সবুজের পতাকার জন্য মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে বলেছে আমাকে তোমরা যদি মেরে ফেল তবে আমার লাশ আমার বাঙালীর কাছে পৌছে দিও।

তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে লড়াই সংগ্রাম করে এই দেশকে শেষ পর্যন্ত আলাদা ভুখন্ড হিসাবে উপহার দিয়েছে। তিনি নিজের পরিবার পরিজন এর কথা কখনো ভাবেন নাই। তিনি ছিলেন দয়ালু। নিজ এলাকার মানুষকে ছাত্র থাকা কালে তিনি ধানের গোলা থেকে চাল ডাল দিয়েছে।

বারং বার তিনি জেল খেটে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও আপোস করেন নাই। তিনি ছাত্র জীবন থেকে লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তারই সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে শুধু পিতার দেখানো স্বপ্নের জন্য ফিরেছেন। কবর থেকে শেখ মুজিব বলেছেন মা তুমি বিদেশ থেক না।

তুমি ফিরে যাও তোমার ভুখন্ডে। সেখানে মানুষ শোষিত বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তুমি তাদের উদ্ধার কর। সোনার বাংলা গড়ে তোল। সেই নেত্রী ১৯৮১ সালে বিদেশ থেকে ফিরে এসে বার বার জেল খেটেছে। বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। সেই নেত্রী আজ বাংলার নেতৃত্ব দিয়ে এদেশকে এগিয়ে নিয়েছে।

তিনি ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি কৃষকেরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সার বঞ্চিত কৃষকদের তিনি সার দিয়ে তাদের ন্যয্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন। সেই নেত্রীর নেতৃত্বে আমরা রাজনীতি করি তাই কোন রক্ষচক্ষুকে আমাদের ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নাই। আমরা এই শার্শার মাটিতে কারো গোলামী করব না।

আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে। শার্শার এক নেতার উদ্দেশ্য বলেন,আপনি সে শিক্ষা পাননি । আপনি পারিবারিক শিক্ষা পাননি তাই শার্শায় যা খুশি তাই করছেন এটা কোন রাজনৈতিক শিষ্টাচার হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, আজ শার্শায় যে ভাবে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা এই আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হামলা মামলা খেয়েছে তা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এই শার্শার একজন নেতা তার অত্যাচারি বাহিনী দিয়ে অনেক নেতা কর্মীকে অত্যাচার জুলুম করেছেন।

শার্শা উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, আজ এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমার বুকটা ভরে গেছে। ১৯৭৫ সালের পর যারা শার্শার আওয়ামীলীগকে বাঁচিয়ে রেখেছিল তারা আজ এই মঞ্চে এসে এক হয়েছে। আজ যিনি শার্শার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের পছন্দ করেন না।

তিনি বিএনপি জামাত এর লোকদের পছন্দ করেন। আজ আমি সঠিক পথে এসে আমার আতœার শান্তি পাচ্ছি। আজ এই জনপদের শীর্ষ নেতার মাথায় বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকি নিয়ে কোন ব্যথা নেই । তার ব্যথা হচ্ছে তার নিকট থেকে সব সরে যাচ্ছে তাদের নিয়ে।

শহিদুল ইসলামকে নিয়ে, গফফার সর্দারকে নিয়ে আমাকে নিয়ে। আজ অবাঞ্চিতরা একত্রিত হচ্ছে বঞ্চিতরা একত্রিত হচ্ছে। পায়ের তলার মাটি ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। তিনি বুঝতে পারছেন। তাই তিনি বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যাকে নিয়ে আলোচনা করছে না। আলোচনায় ব্যাস্ত তিনি আমাদের নিয়ে ।

আমরা কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় পাই না। আমরা শান্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তাই বলে আমাদের আঘাত দিয়ে আর আপনাকে পার পাইতে দিব না। স্বাস্থ্য বিধি মেনে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও বেনাপোল পৌর সভা এলাকার সকল নেতা কর্মীরে মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার বিতরন ও দফায় দফায় স্প্রে করা হয় কোভিড -১৯ করোনা মহামারির জন্য।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক আহসান উল্লাহ মাষ্টার, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইলিয়াছ আযম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শেখ সারোয়ার, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কবির উদ্দিন তোতা,

কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পদক আব্দুর রহমান,শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ কোরবান আলী, ত্রান ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক আলতাপ হোসেন,অর্থ বিষয়ক সম্পাদক খোদাবক্স, সহ দপ্তর সম্পাদক সাধন কুমার গোস্বামী, শার্শা উপজেলা মহিলালীগের সাধারন সম্পাদক শারমিন আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক বিউটি আক্তার, শার্শা উপজেলার আওয়ামীলীগ এর সিনিয়ার নেতা বদিয়ার রহমান তরফদার,

বেনাপোল পৌর প্যানেল মেয়র সাহাবুদ্দিন মন্টু, কাউন্সিলার মিজানুর রহমান, রাশেদ আলী, শার্শা উপজেলা যুবলীগ এর যুগ্ম আহবায়ক সেলিম রেজা বিপুল, বেনাপোল পৌর যুবলীগের আহবায়ক সুকুমার দেবনাথ, সাবেক ছাত্রলীগ এর সভাপতি রুহুল কুদ্দুস ভুইয়া, আওয়ামীগ সাংস্কৃতিক ফোরাম এর বেনাপোল পৌর শাখার সভাপতি রহমত আলী, যশোর জেলা আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম এর সহসভাপতি এমদাদুল হক বকুল,

সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন আলম, ডিহি ইউনিয়ন এর বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেন, বেনাপোল পৌর ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশাদুজ্জামান আশা, পুটখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার সর্দার, নিজামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী নেতা আলিম রেজা বাপ্পি,

নভারন আওয়ামী নেতা মিজানুর রহমান,শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আকুল হোসাইন,যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাইফুজ্জামন সজল, বেনাপোল পৌর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নুর ইসলাম প্রমুখ।