ই-কমার্সের নৈরাজ্যের দায় ই-ক্যাব নেতারা এড়াতে পারেন না

গত দুই বছর ধরে ই-কমার্স খাতে নৈরাজ্য বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলছে, সম্প্রতি সময়ে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, আলেশা মার্টসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করার সংবাদ গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।

গ্রাহকরা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাজপথে পর্যন্ত নেমে এসেছে। ইনফ্লুয়েন্সার মাশরাফি বিন মর্তুজার বাড়িতেও গ্রাহকরা এসে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে।

মঙ্গলবার ২৪ আগস্ট সংবাদ মাধ্যমে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে ই-কমার্স খাতে বাৎসরিক লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার। এফ-কমার্সে ২০২০ সালে লেনদেন হয়েছে প্রায় ৩২০ কোটি ডলার। বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনাময় এ খাতে নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা শুধু মন্ত্রণালয়ে তদবিরে ব্যস্ত থাকেন।

আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যে সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা সহায়তা নিয়েছে। এছাড়া এ সংগঠনের সদস্যদের থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ চাঁদা দিতে হয়। তাছাড়া নিবন্ধনকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম দেখেই তারা সদস্য মনোনীত করেন।

কিন্তু এমএলএম কোম্পানিগুলোকে কীভাবে তারা সদস্য হিসেবে নিল এবং তাদের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের দেনদরবার ও তদবির বাজিতে ব্যস্ত থাকল। অনৈতিক লেনদেনকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ

এবং তার কর্তা ব্যক্তিদের গ্রেফতারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করে গ্রাহকদের প্রাপ্য ন্যায্য দাবি পরিশোধের ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত সুরাহা না করতে পারায় নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা কোনোভাবেই দায়মুক্তি পেতে পারে না বলে আমরা মনে করি।

এতে আরও বলা হয়, আমরা সরকারের এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দাবি জানাচ্ছি ই-কমার্সের নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড এবং দায়দায়িত্ব কতটুকু ছিল তা জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। গ্রাহকদের প্রাপ্য দাবিগুলো প্রয়োজনে নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে পরিশোধ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

রাজপথে ই-কমার্স খাতের ভুক্তভোগীরা আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে আমরা সংহতি প্রকাশ করছি। যখন অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে, সে সময় এ ধরনের নৈরাজ্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।