আফগানিস্তানের পাঞ্জশিরে বিরোধী গ্রুপের হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের ৮ সদস্য নিহত হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিরোধী গ্রুপের মুখপাত্রের বরাতে এনডিটিভি জানায়, সোমবার (৩০ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাতে সংঘর্ষে ৮ তালেবান যোদ্ধা নিহত হন।
১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল তালেবানদের হাতে দখলের যায়। তবে পাঞ্জশির একমাত্র প্রদেশ এখনো পর্যন্ত তালেবানরা কব্জা করতে পারেনি। এছাড়া পাঞ্জশিরে পার্শবর্তী বাঘলান প্রদেশেও তালেবানদের সঙ্গে স্থানীয় আফঘান যোদ্ধাদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
পাঞ্জশিরে ন্যাশনাল রেসিসটেন্স ফোর্স যেটি আহমাদ মাসুদের নিয়ন্ত্রণে তার এক মুখপাত্র ফাহিম দাসতি জানান, পাঞ্জশির উপত্যকার পশ্চিম দিকের প্রবেশ পথে তালেবানরা হামলা চালায়।
আমাদের যোদ্ধারা সেই হামলা প্রতিহত করে। এতে ৮ তালেবান সদস্য নিহত হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন তালেবান সদস্য আহত হয়েছে। আমাদের মাত্র দুই জন সেনা সামান্য আহত হয়েছে।
এ থেকেই বোঝা যায় পাঞ্জশিরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অন্যান্য যে কোন জায়গার থেকে উন্নত। এদিকে ৮ সদস্য নিহত হওয়ার বিষয়ে তালেবানদের পক্ষ থেকে কোন তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
আহমাদ মাসুদ, সাবেক সোভিয়েত বিরোধী আফগানিস্তানের প্রখ্যাত মুজাহিদিন কমান্ডার আহমাদ শাহ মাসুদের সন্তান। আহমাদ মাসুদ পাঞ্জশির উপত্যকায় নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তার নেতৃত্বে কয়েক হাজার যোদ্ধা রয়েছে। এর আগে আহমাদ মাসুদ জানিয়েছেন, তিনি তালেবানদের সঙ্গে সমঝোতায় রাজি আছেন তবে পাঞ্জশির প্রদেশ এবং উপত্যকা আক্রান্ত হলে সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করবেন।
বর্তমানে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩৩টি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু শুধুমাত্র পাঞ্জশির প্রদেশে এখন পর্যন্ত গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা প্রবেশ করতে পারেনি।
বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে কাবুল থেকে প্রায় ১শ’ ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি উপত্যকা পাঞ্জশির। বরং তালেবানকে মোকাবিলার ডাক দিয়েছে সেখানকার মানুষ।
গত ৪০ বছরের ইতিহাসে এই প্রদেশটি বিভিন্ন সময় নানা বহিরাক্রমণ প্রতিহত করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সোভিয়েত রাশিয়ার আক্রমণ। এরপর ৯০’র দশকে তালেবানকে প্রতিরোধ করে উপত্যকার মানুষ।
কেনো পাঞ্জশির দখলে নিতে পারছে না তালেবান? এ নিয়ে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, উঁচু পাহাড় ও গিরিখাতের কারণে অনেকটা দুর্গে পরিণত হয়েছে উপত্যকাটি।
সরু রাস্তার কারণে শত্রুরা প্রবেশের চেষ্টা করলে পাহাড় থেকে আগেই তাদের অবস্থান চিহ্নিত করা যায়। তাই এখানে বহিরাগতদের প্রবেশ বেশ কঠিন।
এছাড়াও আহমেদ মাসুদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের তালেবানবিরোধী যোদ্ধারা। এমনকি আফগান সেনাবাহিনী থেকেও সামরিক সাহায্য পাচ্ছেন তারা।